তৃতীয় দফায় ভাসানচর যাচ্ছে আরও ৩ হাজার রোহিঙ্গা
চট্টগ্রাম ব্যুরো || বিজনেস ইনসাইডার
রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচর যাচ্ছে নৌবাহিনীর জাহাজ। । ছবি: পিআইডি
চট্টগ্রাম (২৯ জানুয়ারি): বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে আরও তিন হাজার উদ্বাস্তু তৃতীয় দফায় নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-ঘাট থেকে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। শনিবার আরও প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবেন। খবর বাসস, ইউএনবি।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা বলেন, 'পতেঙ্গা নৌ-ঘাট থেকে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌবাহিনীর জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের জাহাজে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়। শনিবার আরও প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবেন।'
শামছুদ্দৌজা জানান, আগামীকাল শনিবার আরও প্রায় দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হবে। তারা ৩৫টি বাসে করে আজ চট্টগ্রামে পৌঁছবে এবং আগামীকাল সকাল ৯টায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করবে।
বৃহস্পতিবার ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদেরকে শিবির হতে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। পরে সেখানে তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করে বাসে চট্টগ্রাম নগরীর বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের জন্য সেখানে নির্মিত অস্থায়ী শিবিরগুলোতে নানা সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। এ জন্য নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সর্বাধিক নিরাপদ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন অস্থায়ী আশ্রয় শিবির নির্মাণ করা হয়।
ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গাদের অনেক বোঝাতে হয়েছিল। পরে সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ এবং ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৮০৪ জনকে দ্বীপটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যাওয়া এসব রোহিঙ্গা ভাসানচরে আধুনিক ও নিরাপদ বাসস্থান পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ এবং সরকারের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানায়। তাদের দেখানো পথ ধরে উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত আরও রোহিঙ্গার মধ্যে দ্বীপে যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।