২৪ ঘণ্টায় দেশের ৪ জেলায় বন্যার শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারী বর্ষণের কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।
বৃষ্টিপাতের মধ্যে দেশের নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (>৮৯ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। তবে পরবর্তী ২ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এর প্রেক্ষিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে পরবর্তী একদিন পর্যন্ত তা স্থিতিশীল এবং এর পরদিন থেকে তা হ্রাস পেতে পারে।
এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে এবং জেলাগুলো সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অন্যদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরবর্তী একদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
অন্যদিকে, রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। সেই সঙ্গে রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। পাশাপাশি তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এই অবস্থায় আগামী ২ দিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ধীরগতিতে হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পানি সমতল স্থিতিশীল এবং এর পরবর্তী ২ দিনে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। পরবর্তী ৩ দিনে এসব নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান নদী মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া সোমেশ্বরী, ভুলাই নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সারিগোয়াইন, কংস নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং পরবর্তী ৩ দিন পর্যন্ত পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, গোমতী নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আর হালদা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী ৩ দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) কম প্রবণতা রয়েছে। ফলে এই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া বঙ্গোপসাগর এলাকায় কোনো লঘুচাপ না থাকায় আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোর স্বাভাবিক জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।