দেশে কালো টাকা সাদা করার রেকর্ড

ঢাকা(০৫ জানুয়ারি): দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো রেকর্ড পরিমাণ অপ্রর্দশিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা বা বৈধ করা হয়েছে। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা সাদা করা হয়েছে। মোট ৭ হাজার ৬৫০ জন করদাতা এই টাকা সাদা করেন। আর এর বিপরীতে এনবিআর কর পেয়েছে ৯৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এনবিআরের উর্ব্ধতন এক কর্মকর্তা এতথ্য জানান। 

এনবিআরের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ) হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে জানান, দেশের ইতিহাসে কোন একটি অর্থবছরে এত অপ্রর্দশিত আয় প্রর্দশনের কোন রেকর্ড নেই। এটাই প্রথম। 
  
কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,  চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) অপ্রর্দশিত অর্থের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে না, এমন আইনি নির্দেশনার কারণে করদাতার রেকর্ড পরিমাণ কালো টাকা সাদা করেছেন। তারা বলছেন, এই টাকা দেশের ফরমাল ইকোনমিতে প্রবেশ করছে। যা বিনিয়োগ বৃদ্ধি , কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কর জিডিপির হার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। 

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস বা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে দেশের ব্যাক্তিশ্রেণির করদাতার আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলের তথ্য প্রকাশ করেছে এনবিআর। 

এতে দেখা যায়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের যে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে, তাতে রেকর্ড সংখ্যক করদাতা সাড়া দিয়েছেন। এনবিআর বলছে, করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের পরিমাণ ৯ শতাংশ বেড়েছে। 

এর মধ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯ এর (এ) ধারা অনুযায়ী ২০৫ জন করদাতা প্রায় ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা কর পরিশোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুমোদিত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করেছেন। 

একই ধারা অনুযায়ী সাত হাজার ৪৪৫ জন করদাতা আয়কর পরিশোধের মাধ্যমে প্রায় ৯৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করেছেন। 

করদাতাদের জন্য আয়কর অধ্যাদেশের ১৯-এর এ ধারার মাধ্যমে কর পরিশোধের সুযোগ ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

প্রসঙ্গত, দেশে এ পর্যন্ত ১৭ বার অপ্রদর্শিত অর্থ  প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা হয়েছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। ওই সময় ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ সুযোগে ৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা সাদা করে। দেশে প্রথম এ সুবিধা দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫ সালে সামরিক আইনের আওতায়।