এসআর’র তিন রেষ্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা (১৯ অক্টোবর): এসআর গ্রুপের আরও তিনটি রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়েছে। এই তিন প্রতিষ্ঠান ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করে ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই তিনটি রেস্টুরেন্ট ভ্যাট ফাঁকি দিতে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে। প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে বিজয় নগরে আকরাম টাওয়ারে অবস্থিত সুং ফুড গার্ডেন, ধানমন্ডি ১০/এ রোডের ৫৪ নং বাড়ির ইম্পেরিয়াল আমিন আহগাম্মেদ সেন্টারের গার্লিক এন জিঞ্জার এবং যমুনা ফিউচার পার্কের প্রথম তলায় গার্লিক এন জিঞ্জার।
এর আগে একই গ্রæপের ফুড ভিলেজ ও ফুড ভিলেজ প্লাস নামক ২টি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের ২০০ কোটি টাকার বিক্রির তথ্য গোপন ও এর বিপরীতে ২৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করা হয়।
এছাড়া দি গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির রাজধানীর গুলশান-২, যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমন্ডি এলাকায় ৩টি অভিজাত রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদ্ঘাটন করে ভ্যাট গোয়েন্দারা। এই ঘটনায় এসআর গ্রæপটির বিরুদ্ধে প্রায় ৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়।
ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল রাজধানীর নিকুঞ্জ-১ এর ৪৬ নম্বরের লেকড্রাইভের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুব নেতৃত্ব দেন।
এতে এসআর গ্রæপের মালিকানাধীন এই ৩টিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত ও গোপন করা বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আজ সোমবার এই ৩টি রেস্টুরেন্টের ফাঁকির হিসাব চ‚ড়ান্ত ও সেই সূত্রে ভ্যাট আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান অনুযায়ী, সুং ফুড গার্ডেন (বিআইএন-০০১৩১৬২৯৭-০২০৮) প্রতিষ্ঠানটি দাখিল পত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। কিন্তু অভিযানে জব্দকৃত কাগজপত্র থেকে প্রাপ্ত প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এই ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২শতাংশ হারে সুদ হয়েছে এক কোটি ২ লাখ টাকা।
গার্লিক এন জিঞ্জার (বিআইএন-০০২১২৮৮৬২-০১০১) নামের প্রতিষ্টানটি দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৩ কোটি ৪৬ লাখ। কিন্তু জব্দকৃত তথ্যে দেখা যায়, তাদের প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ১৫ টাকা ৭ লাখ টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে এক কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৯০ লক্ষ টাকা আদায়যোগ্য হয়েছে।
অন্যদিকে, গার্লিক এন জিঞ্জার (বিআইএন-০০১২১৫৮৮৩-০২০১) নামের প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে বিক্রয় ঘোষণা দিয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এর প্রকৃত ভ্যাট আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এখানেও ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় একইভাবে মাসিক ২শতাংশ হারে সুদ আরোপযোগ্য ২৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্যে উক্ত ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গার্লিক এন জিন্জার ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট এবং বাকি দুটো ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে।
এই ৩টিসহ এ পর্যন্ত মামলা দায়েরকৃত অন্যান্য ৫টি রেস্টুরেন্টে মোট বিক্রির তথ্য গোপন পাওয়া গেছে ২৪৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর এতে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।