দাম নিয়ন্ত্রণে ১৫ মার্চের মধ্যে আমদানির চাল আনার নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
চালের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে,ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (০১ মার্চ): দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে আগামি ১৫ মার্চের মধ্যে বেসরকারিভাবে আমদানির অনুমতি দেওয়া সব চাল আনার নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রনালয়। নতুন এই সময়ের মধ্যে চাল আমদানি সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ প্রসঙ্গে বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে বলেন, বেসরকারি খাতে চাল আমদানির জন্য আমরা সময় বাড়িয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর আনার নির্দেশনা দিয়েছি। আগামি ১৫ মার্চের মধ্যে যারা চাল আনার অনুমতি পেয়েছে তাদের চাল আনতে হবে।
চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে চালে বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু উপায়ে যাতে কেউই চালের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চাল আমদানির জন্য এরইমধ্যে অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেসব বেসরকারী আমদানিকারক ইতিমধ্যে এলসি খুলেছে, কিন্তু চাল বাজারজাত করতে পারেনি, তাদের এলসি করা সম্পূর্ণ চাল বাজারজাতকরণের জন্য আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হলো। এলসি খোলার কতদিনের মধ্যে চাল বাজারজাত করতে হবে তা বরাদ্দপত্রে বলে দেওয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৭ ডিসেম্বর বেসরকারীভাবে চাল আমদানির জন্য বৈধ আমদানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী সব কাগজপত্রসহ ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিলো।
প্রসঙ্গত, বেসরকারী পর্যায়ে মোট ৩২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চাল আমদানির অনুমতি পাওয়া যেসব বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ১৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে ঋণপত্র (লেটার অব ক্রেডিট-এলসি) খুলতে পারেনি, এরইমধ্যে তাদের বরাদ্দপত্র বাতিল করা হয়েছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে সরকার বেসরকারীভাবে চাল আমদানি শুরু করে। প্রথমে ৩ জানুয়ারি অনুমোদন দেয় সরকার। ৭ জানুয়ারি ভারত থেকে আমদানির প্রথম চালান দেশে আসে। পরে বেশ কিছু শর্তে বেসরকারী খাতে চার লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।
দেশে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও গেল মাস থেকে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে জানুয়ারিতে বেসরকারী খাতে আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে সরকার। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী।
বেসরকারি আমদানিকারকদের চাল আমদানির ক্ষেত্রে যেসকল শর্তারোপ করা হয় এর মধ্যে ছিলো, বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাত দিনের মধ্যে এলসি খুলতে হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য (পোর্ট অব এন্ট্র্রিসহ) খাদ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে ইমেলে জানাতে হবে। সর্বোচ্চ ৫ হাজার টন আমদানির বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০ দিনের মধ্যে সব চাল বাজারজাত করতে হবে। ১০ হাজার টন বরাদ্দপ্রাপ্তরা এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ৩০ দিনের মধ্যে সব চাল বাজারজাত করার শর্ত দেওয়া হয়।