বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক: ৮ বিষয়ে আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বিডি
ঢাকা (০৭ মার্চ): বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাণিজ্যেও ক্ষেত্রে বাঁধা দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সোমবার অনুষ্ঠিত হবে উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠকে ৮টি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন। অন্যদিকে ভারত প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প সচিব অনুপ ধাওয়ান।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণলয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিএসটিআই , সড়ক ও জনপথ বিভাগ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়,বিভাগ,দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।
বৈঠকে গত বছরের ১৫-১৬ জানুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা; বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য বিষয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এর ১৩ তম সভার অগ্রগতি পর্যালোচনা; দু’দেশের মধ্যকার বিরাজমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাণিজ্য বাঁধা দূরীকরণ; কতিপয় বাংলাদেশি পণ্যের উপর ভারত সরকার কর্তৃক আরোপিত অ্যান্টি ডাম্পিং বিষয়ে আলোচনা; দু’দেশের মধ্যে কম্প্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশীপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) স্বাক্ষরের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা; বর্ডার হাটের সংখ্যা সম্প্রসারন ও সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি; বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বন্দর সুবিধা সম্প্রসারণ; বাংলাদেশ ও ভারতের অংশগ্রহণে বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামকে অধিকতর কার্যকরকরণ বিষয়ে আলৈাচনা হবে।
এদিকে, রবিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের বাণিজ্য সচিব। এদিন বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রির দপ্তরে এই আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয় নিয়ে ব্রিফিং করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে টিপু মুন্সী বলেন, ইন্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ কয়েকটি সেক্টরের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফুড প্রসেসিং, মোটরযানসহ আরও দু’একটি সেক্টর যেগুলো তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেখানে তারা ইনভেস্ট করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি আরো বলেন ভারতের সঙ্গে এখন আমাদের অনেকগুলো ট্রেডের ম্যাটরিয়ালের সুবিধা রয়েছে। সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য। মূল আলোচনাটি হবে আগামীকাল আমাদের মন্ত্রনালয়ের সচিব এবং ভারতের বাণিজ্য সচিবের মধ্যে। কাল তারা বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে দুই পক্ষেরই কিছু সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি। ভারতের সচিব বলেছেন তিনি অত্যন্ত পজিটিভ মুড নিয়েই বাংলাদেশে এসেছেন। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করছি, সেটাকে মাথায় রেখে আমরা চাই আমাদেও পুরনো সমস্যাগুলো যেন সমাধান হয়। আমরা যেন সেই সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করতে পারি এবং নতুন চিন্তা-ভাবনাগুলো নিয়ে যেন কাজ করতে পারি।
তিনি বলেন, কাস্টমসের যে সমস্যা রয়েছে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া দরকার, সেটা তারা বলেছে। বেনাপোল বর্ডারে কিছু সমস্যা রয়েছে, সেটাও তারা লিখেছে। আখাউড়া ও আগরতলা যে বর্ডার রয়েছে সেগুলো যাতে আরো কার্যকর করা যায়, সেগুলো ঢাকা থেকে মাত্র দুই ঘন্টার পথ। এর কমিউনিকেশন আরো সুবিধাজনক হলে আরও ভালো হবে, সেটার দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য তারা বলেছে।
উপস্থিত সাংবাদিকদেও এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে তারা কথা বলেছেন। কয়েকটি সেক্টরের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এরমেধ্যে ফুড প্রসেসিং,মোটরযানসহ আরো দু'একটি সেক্টর যেগুলো তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেখানে তারা ইনভেস্ট করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভারতের সঙ্গে এখন আমাদের অনেকগুলো ট্রেডের ম্যাটরিয়ালের সুবিধা রয়েছে।
তিনি বলেন, হয়তো ২০২৬ সালে আমাদের গ্রাজুয়েশন হয়ে যাবে, তারপওে হয়তো আরো তিন বছর আমরা জিএসপি প্লাস পেতে পারি। কিন্তু আমরা আরো চিন্তা করলে লম্বা সময়ের জন্য আমাদের প্ল্যান করা জরুরি। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রচারের জন্য সেসব পরিকল্পনা নিয়ে আগালে পরবর্তীতে আমাদের সুবিধা হবে। প্রধানমন্ত্রীও চান পিটিএ, এফটিএগুলো আমরা যেন করি, ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা যেন বেনিফিটটা পাই।
হঠাৎ করে ভারতের বাংলাদেশের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হওয়ার আগ্রহ কেন বাড়লো উপস্থিত সাংবাদিকদেও এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়নি। আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী চলছে। তাছাড়া ভারতের দিক থেকে ওরা এবং আমরা ব্যাপারটা বিশেষ করে আমি নিজে উৎসাহী এ ব্যাপারে। যাতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য ডেভলপ করা যায়।