Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
করোনা কালে ৬২ শতাংশ কর্মীর বেতন কমেছে: সানেমের জরিপ

মঙ্গলবার

১৯ নভেম্বর ২০২৪


৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১,

১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

করোনা কালে ৬২ শতাংশ কর্মীর বেতন কমেছে: সানেমের জরিপ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ০০:২৭, ১১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০০:২৮, ১১ মার্চ ২০২১
করোনা কালে ৬২ শতাংশ কর্মীর বেতন কমেছে: সানেমের জরিপ

ছবি: সানেমের লোগো

ঢাকা (১০ মার্চ): করোনাভাইরাস মহামারি সময় বেতন বা মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন এমন ৬২ শতাংশ কর্মী বা শ্রমিকের বেতন কমেছে বলে এক জড়িপে জানিয়েছে সানেম। বুধবার সানেমের আয়োজনে ‘কর্মসংস্থান ও অভিবাসনের ওপর মহামারির প্রভাব: সানেমের জরিপের ফলাফল’ শিরোনামের অনুষ্ঠিত এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবিনারে জড়িপের ফলাফল উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা। 

ওয়েবিনারে ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, বেতন বা মজুরির বিনিময়ে যারা কাজ করেন এমন ৬২ শতাংশ কর্মী বা শ্রমিক জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে তাদের বেতন ২০১৯ সালের তুলনায় কমে গেছে, ৭ দশমিক ৯ শতাংশ জানিয়েছেন তারা এই সময়কালে কাজ হারিয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত (জরিপ চলাকালীন সময়) কাজ ফিরে পাননি, ১ দশমিক ৭ শতাংশ জানিয়েছেন তারা ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর মাসে সাময়িকভাবে কাজ হারিয়েছিলেন, ৫ দশমিক ৪ শতাংশ জানিয়েছেন তারা পেশা পরিবর্তন করেছেন। স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত এমন ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালের মধ্যে তাদের আয় কমে গিয়েছে, ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন এই সময়কালে তাদের কাজ বা ব্যবসা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর মাসে তাদের ব্যবসা বা কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।  

মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন এমন ৭ শতাংশ পুরুষ জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর মাসে তারা কাজ হারিয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত তারা কাজে যোগ দিতে পারেননি, নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ১৬ শতাংশ। 

কৃষিখাতে বেতন বা মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন এমন ৬৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে ২০১৯ সালের তুলনায় তাদের আয় কমে গিয়েছে, তৈরি পোশাক খাতের জন্য এই হার ৬৯ শতাংশ, তৈরি পোশাক ব্যতীত অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের জন্য এই হার ৫৮ শতাংশ, নির্মান খাতের জন্য ৭৪ শতাংশ, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় ৫৭ শতাংশ এবং পরিবহন খাতের ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন তাদের বেতন বা মজুরি এই সময়কালে কমে গিয়েছে। 

বেতন বা মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন এমন ৩৮ শতাংশ কর্মজীবী জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বরের সময়কালে তাদের বেতন কমেনি, ২৮ শতাংশ জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে তাদের বেতন বা মজুরি কমেছিল কিন্তু জরিপ চলাকালীন সময়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, ২০২১) তাদের বেতন বা মজুরি আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের অবস্থায় ফিরেছে এবং ৩৪ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে তাদের বেতন বা মজুরি কমেছিল কিন্তু জরিপ চলাকালীন সময়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, ২০২১) তাদের বেতন বা মজুরি আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের অবস্থায় ফেরেনি। 

স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত এমন ২০ শতাংশ কর্মজীবী জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বরের সময়কালে তাদের আয় কমেনি, ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে তাদের আয় কমেছিল কিন্তু জরিপ চলাকালীন সময়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, ২০২১) তাদের আয় আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের অবস্থায় ফিরেছে এবং ৩৭ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে তাদের আয় কমে ছিল কিন্তু জরিপ চলাকালীন সময়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, ২০২১) তাদের আয় আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের অবস্থায় ফেরেনি। 

শহর এলাকায় বেতন বা মজুরির বিনিময়ে কাজ করতেন এমন ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালে তারা কাজ হারিয়েছেন এবং এখনো বেকার রয়েছেন, গ্রামের ক্ষেত্রে এই হার ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ; বরিশালে এই হার ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১০ শতাংশ, ঢাকায় ৮ শতাংশ, খুলনায় ৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ শতাংশ, রংপুরে ১০ শতাংশ এবং সিলেটে ৭ শতাংশ। 

জরিপে দেখা গিয়েছে ৪৯ শতাংশ কর্মজীবী ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে চাকরি হারানো, বেতন না পাওয়া বা কম বেতন পাওয়া, বাসা ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করতে না পারা ইত্যাদি কারণে শহর থেকে গ্রামে চলে এসেছেন। তবে এই ৪৯ শতাংশ কর্মজীবীর প্রায় সবাই আবার শহরে ফিরে কাজে যোগ দিয়েছেন বা শহরে কাজ খুঁজতে এসেছেন। 

জরিপে দেখা গিয়েছে ২০ শতাংশ প্রবাসী শ্রমিক ২০২০ সালের মার্চ-ডিসেম্বর সময়কালের মধ্যে কাজ হারিয়েছেন। প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ৫ শতাংশ বিভিন্ন কারণে দেশে ফিরে এসেছেন। 

ড. বিদিশা বলেন, যেসব খাতের কর্মজীবীগণ এখনো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ধারায় পিছিয়ে আছে তাদের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে পরিবহন, নির্মান এবং হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। এসব খাতের জন্য ন্যুনতম শর্তে বিশেষায়িত প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। একইসাথে স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিতরা যেহেতু তুলনামূলকভাবে পুনরুদ্ধারে পিছিয়ে রয়েছেন, তাই তাদের জন্য নীতি সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিরে আসা প্রবাসীদের আবার কাজে পাঠানোর বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে। একইসাথে বাইরে কাজ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়াগত খরচ রয়েছে তা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ফিরে আসা শ্রমিকদের দেশের শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াসও পাশাপাশি চালাতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প বাড়াতে হবে। ঢাকার বাইরের শহর এলাকাগুলিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন করতে হবে। 

কর্মসংস্থান ও অভিবাসনের ওপর করোনা মহামারির প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে সানেম ২০২১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে খানা পর্যায়ে জরিপটি পরিচালনা করেছে। মোবাইল ফোন কলের মাধ্যমে পরিচালিত এই জরিপের খানাগুলিকে নির্বাচন করা হয়েছে ২০১৮ সালের সানেম-জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশন (জিইডি) এর পরিচালিত ১০৫০০ খানার মধ্য থেকে। 

এ জরিপে ২৭৩ জন প্রবাসী শ্রমিক, ২৩০ জন দেশের মধ্যে অন্যত্র কাজের জন্য স্থানান্তরিত কর্মী বা শ্রমিক এবং দেশ বা দেশের বাইরে কাজের জন্য স্থানান্তরিত নন এমন ২৮৪৫ জন কর্মী বা শ্রমিকের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। 

ওয়েবিনার পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পওতিয়ানেন। আলোচক হিসেবে ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ওয়েবিনারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন।  
 

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়