Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীতে উজ্জ্বল তারকা বাংলাদেশ

বুধবার

২০ নভেম্বর ২০২৪


৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১,

১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীতে উজ্জ্বল তারকা বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ০০:২৯, ২৭ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০১:০৭, ২৭ মার্চ ২০২১
স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীতে উজ্জ্বল তারকা বাংলাদেশ

ইনফোগ্রাফ: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (২৬ মার্চ): বাংলাদেশের রূপান্তরের গল্প এক কথায় বলতে গেলে ‘অবিশ্বাস্য’। এদেশের বেঞ্চমার্কের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিল প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, মাথাপিছু আয় ছিল ৯৩ মার্কিন ডলার, জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ ছিল দারিদ্র্যসীমার নিচে আর আমাদের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর।

আর এখন, ২০১৯ সালে দেশের অর্থনীতি প্রায় ৩০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে যদি আমরা ৬% প্রবৃদ্ধি ধরে হিসাব করি তবুও এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশের এ রূপান্তরের গল্প সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশকে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। একজন ছাত্র হিসাবে তিনি বাংলাদেশের জন্ম প্রত্যক্ষ করেছেন। আর এখন তিনি দেশের সূবর্ণজয়ন্তী বা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছেন।

ড. আতিউর বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য ছিল, এখন তা ৪৪ বিলিয়ন ডলার। গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। করোনা মহামারীর আগে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ২০ শতাংশ, বাংলাদেশের জন্মের সময় এ হার ছিল ৮০ শতাংশেরও বেশি।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, পঞ্চাশ বছর আগে মাথাপিছু ছয় সন্তান জন্ম নিলেও এখন সেটা কমে দুই সন্তানে নেমে গেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ক্রমাগত বাড়ার কারণগুলির মধ্যে এটি অন্যতম বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ কয়েক বছরে মানব উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য উন্নতি অর্জন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে শুরুর দিকে বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল। নারীর ক্ষমতায়নে দেশের অবস্থান এখন এই অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে ভাল।

দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ড. আতিউর বলছেন, “আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে এতো ভাল করছি যে, মোট জনসংখ্যার ৮০% থেকে ৯০% মানুষ আর্থিক ব্যবস্থায় অংশ নিচ্ছে। এদের বেশিরভাগ অ্যাকাউন্টই সক্রিয় রয়েছে। 

মোবাইলের আর্থিক পরিষেবা এবং এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের প্রচলিত আর্থিক ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যবস্থা দেশকে রেমিট্যান্স পেতে সহায়তা করেছে।

ড. আতিউর রহমান

তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালে দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালে এটি এক হাজার গুণ বেড়ে বেড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আমরা আশা করছি, এ বছর এই রেমিট্যান্স ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।

তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রেও অসাধারণ সাফল্য লক্ষ্য করা গেছে। ১৯৭২-৭৩ সালে, বাংলাদেশ হেক্টর প্রতি ১ টন উৎপাদন করতো এবং এখন তা বেড়েছে দাাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ টনে। কৃষি সূচকে বাংলাদেশ ১৪৫ তম স্থানে রয়েছে। যা ভিয়েতনাম, চীন, আর্জেন্টিনা ও ভারতের চেয়েও ভালো।

ড. আতিউর বলেন, “কেবল খাদ্যশস্যই নয়, আমাদের কৃষি পোল্ট্রি, ফিশারি, গবাদি পশু ও হর্টিকালচারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈচিত্রময় ও আধুনিক হয়ে উঠেছে। এটি আসলেই মনমুগ্ধকর ঘটনা।"

জলবায়ু চ্যালেঞ্জের প্রশ্নে ডঃ আতিউর বলেন, বাংলাদেশ অনেক দেশের তুলনায় অনেক বেশি ভালো করছে। “জলবায়ু ঝুঁকির প্রশ্নে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলায় বাংলাদেশের ডেল্টা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমাদের এ পরিকল্পনা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আরও অনেক কিছু বিবেচনা করছে।”

এর পরেও, আত্মতুষ্ট হওয়ার মতো কিছুই নেই বলে উল্লেখ করেন অর্থনীতিবিদ ডঃ আতিউর।

ড. আতিউর বলেন, “এখনো আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বড় চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হল কর্মসংস্থান।”

তরুণদের ডিগ্রি এবং শিক্ষা রয়েছে, তবে তাদের বেতন কম। এর মানে হচ্ছে জ্ঞান অর্থনীতিতে দেশ পিছিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা সূচক দুর্বল। শিক্ষকের গুণমান ছাড়াই শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার এর কারণ হতে পারে।

ড. আতিউর বলেন, “আমাদের শিক্ষকের মান, পরীক্ষাগার, সঠিক প্রযুক্তি এবং প্রশাসনের উপর ফোকাস করা দরকার। আমরা যে শিক্ষিত তরুণদের তৈরী করছি, নিয়োগকর্তারা তাদের গ্রহণ করছেন না।”

ড. আতিউর রহমান মনে করেন, বাংলাদেশ যে তৃতীয় চ্যালেঞ্জ মুখোমুখি সেটি হচ্ছে অবকাঠামোগত ঘাটতি। তিনি অবকাঠামোর মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কোভিড -১৯ মহামারীর কারণে ৩৩ টি জেলায় অবকাঠামোগত কাজ ব্যাহত হয়েছে।

তিনি অবশ্য বলেন, এ পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকার একটি স্মার্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। সেটি হলো মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া। "মেগা প্রকল্পগুলি শেষ হলে অবকাঠামোগত বিশেষত পদ্মা সেতু দিয়ে ব্যাপক উন্নতি হবে।" 

পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল মূল অর্থনীতির সাথে যুক্ত হবে এবং মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, কেবল পদ্মা সেতু জিডিপিতে ১ শতাংশ পয়েন্ট যোগ করবে। তিনি বলেন, মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীর কাজ শেষ হলে সেটাও জিডিপিতে আরও ২% যোগ করবে।

ড. আতিউর রহমান মনে করেন, এই অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলির পাশাপাশি আগে ও পিছে যুক্ত থাকা অন্যান্য কার্যক্রমও যথাসময়ে শেষ করতে হবে।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়