এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদ বাতিলের দাবিতে উপদেষ্টাকে চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক: || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটির সদস্যদের একাংশ। এ ব্যাপারে তারা অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে চিঠি দিয়েছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বরাবর গত রোববার এই চিঠি দেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি আবুল কাসেম হায়দার এবং সাধারণ সদস্য জাকির হোসেন, আলিজামান, আবদুল হকসহ বেশ কয়েকজন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে এফবিসিসিআইয়ের কার্যক্রম ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের স্বার্থে পরিচালিত হয়নি; বরং অনির্বাচিত ও একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের তোষামোদী, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলসহ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিল।
রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু অসাধু ও অব্যবসায়ী পর্ষদের নেতৃত্বে এসে এফবিসিসিআইয়ের অফিসকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছিল। তারা বিভিন্ন বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেশের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল।
এ নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি আবুল কাসেম হায়দার বলেন, ‘আমরা প্রায় ৫০ জন সদস্য ফেডারেশনের বর্তমান পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক বসানোর দাবিতে চিঠি দিয়েছি। আমরা চাই, এফবিসিসিআইয়ের গঠনতন্ত্রে সংস্কার আনার পর সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব হস্তান্তর করা হোক।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদের কয়েকজন সদস্যসহ সাধারণ সদস্যদের একাংশ সংগঠনটির পুনর্গঠন বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি তোলেন।
তারা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করেন।
এদিকে গত সপ্তাহে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ব্যবসায়ী সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এক মতবিনিময়সভায় কয়েকজন ব্যবসায়ী এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কারের দাবি জানান। সভায় ব্যবসায়ী নেতারা বাণিজ্য সংগঠনের দলীয়করণের পেছনে রাজনীতিবিদ নয়, নিজেদেরই দায়ী করেন।
তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরবর্তী সভাপতি ও সহসভাপতি কে হবেন, তা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ঠিক করে দেওয়াটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে সভাপতি পদে সরকার সমর্থিত প্রার্থীর বিপরীতে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।
সর্বশেষ গত বছরের জুলাইয়ে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে আংশিক ভোট হয়। যদিও ভোটের আগেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল, সভাপতি কে হবেন। সভাপতি মাহবুবুল আলম আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। সাতজন সহসভাপতির মধ্যে পাঁচজনই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে রয়েছেন।