কর কমানোর দাবি, স্থিতিশীল অগ্রগতি রবির
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৬ নভেম্বর): পুঁজিবাজারে আসতে যাওয়া দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডকে ৭৭ শতাংশ হারে কর দিতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, দুই শতাংশ হারে রেভিনিউ’র (রাজস্ব) উপর টার্নওভার ট্যাক্স দেওয়ার ফলে সরকারকে ৭৭ শতাংশ কর দিতে হয়।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির ২০২০ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একই খাতের কোম্পানিকে (গ্রামীণফোন) ৪০-৪৫ শতাংশ কর দিতে হয়। আর রবিকে কর দিতে ৭৭ শতাংশ, এটা কমানোর দাবি জানাচ্ছি। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) তে আসার আগে সরকারের পক্ষ থেকে কর কামানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, রবি হল একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যাকে পুঁজিবাজারে আসার পরও সবচেয়ে বেশি হারে কর দিতে হচ্ছে। এই খাতের কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ১০ শতাংশ হারে করপোরেট কর কমানো হয়েছে। আর রবির ক্ষেত্রে কমানো হচ্ছে ৫ শতাংশ। অর্থাৎ রবিকে ৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর বেশি দিতে হচ্ছে। এই ৫ শতাংশ কর কমনোর কথা থাকলেও কমানো হয়নি।
তিনি বলেন, তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে গ্রামীণফোন লভ্যাংশের উপর ৪০ শতাংশ হারে কর দেয়। আর আমাদেরকে কর দিতে হচ্ছে রেভিনিউ’র উপরে। প্রতিবছর আমাদের রেভিনিউ হয় ৭ হাজার কোটি টাকা। আর সেখানে ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স দিলে সরকারকে দিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৪০ কোটি টাকা।
দেশের কর ব্যবস্থায় এই বৈষম্য দেখে বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে নিরুৎসাহী হবে উল্লেখ করে মাহতাব উদ্দিন বলেন, শুধু টেলিযোগাযোগ খাতে কেন অন্য কোনো খাতে বিদেশি কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে না এই কর ব্যবস্থার কারণে।
বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক ফোর-জি’র আওতায় চলে এসেছে। দ্রুতই শতভাগ গ্রাহক ফোর-জি’র আওতায় চলে আসবে। কোভিডের কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমলেও এখন সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠছে। সামনে ব্যবসা ভালো হবে।
অনুষ্ঠানে রবির কর্মকর্তা শাহেদ আলম এবং রুহুল আমীন তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
এতে বলা হয়, তৃতীয় প্রান্তিকে (অর্থাৎ জুলাই-৩০ সেপ্টেম্বর সময়ে) রবি আজিয়াটার মুনাফা হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা হয়েছিল ৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ২০ কোটি টাকা।
রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ১ লাখ যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ শতাংশ। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫ কোটি ১ লাখ সক্রিয় গ্রাহকের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৪৭ লাখ যা মোট গ্রাহকের ৬৯ দশমিক ২ শতাংশ।