অভিযান ও নজরদারি বাড়ানোর দাবি ক্রেতাদের
সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না আলু
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা(১৭ অক্টোবর): খুচরা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না আলু। গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও, আজ শনিবার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫টাকায়। বাজারে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে গত সপ্তাহে সরকার খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণের পর আলুর মুল্য কমবে বলে ধারণা করা হলেও মাঠের চিত্র একেবারেই উল্টো।
শনিবার রাজধানীর কাওরান বাজারের পাইকারি আড়তগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাইকারিতেই আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। এরমধ্যে রাজশাহীর প্রতিকেজি আলু ৪২ টাকা, বিক্রমপুরের আলু ৪১ টাকা, বগুড়া লাল আলু ৪০ টাকা, ময়মনসিংহের লাল আলু ৪২ টাকা, আর পাঁচমিশালী ছোট-বড় আলু কেজি প্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে সরকারের নির্ধারিত মুল্য ২৫ টাকা।
পাইকারি বিক্রেতা মাইদুল ইসলাম পাইকারিতে আলু দাম বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, আলুর উৎপাদন কেন্দ্রেই আলু দাম বেশি। আমরা বেশি দামে আলু কিনেছি। বন্যা ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
সরকারের দাম নির্ধারন করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জানি না সরকার কিভাবে দাম নির্ধারন করেছে। আমার মনে তারা মাঠ পর্যায়ের খোঁজ না নিয়েই দাম নির্ধারন করেছেন। নইলে সরকারের খুচরা দামের চাইতে পাইকারি দাম ১০ টাকা বেশি হয় কেমনে। তিনি জানান, সরকারের নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করলে তাদের লোকসানে পড়তে হবে। তবে কম দামের আলু বাজারে এলে তখন তারা কম দামে আলু বিক্রি করবে।
রাজধানীর পাইকারি বাজারের চাইতে খুচরা বাজারে সকল ধরণের আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি।
হাতিরপুল বাজার, কাঁঠালবাগান বাজার, মগবাজার, রামপুরা বাজার, মালিবাগ বাজার, শান্তিনগর বাজার, সেগুনবাগিচা, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার এবং খিলগাঁও খুচরা বাজারে খোজঁ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হাতিরপুলের খুচরা বিক্রেতা আলাউদ্দিন শেখ জানান, পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কেনা। যেকারণে বেশি বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে সরকারের নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। হাতিরপুলের ক্রেতা মৃণাল চক্রবর্তী জানান, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়িয়েছেন। অথচ নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করা হচ্ছে না। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখাচ্ছেন। এ বিষয়ে সরকারকে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন এ ক্রেতা। সব ক্রেতাই দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারের নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা জোরদার কথা বলেছেন।
এর আগে গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) প্রতিকেজি আলুর দাম হিমাগারে ২৩ টাকা, পাইকারিতে ২৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৩০ টাকা কেজিদরে বিক্রি নিশ্চিত করতে সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। একইসঙ্গে উলেøখিত দামে কোল্ডস্টোরেজ, পাইকারি বিক্রেতা ও ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতাসহ তিন পক্ষই যাতে আলু বিক্রি করেন সেজন্য কঠোর মনিটরিং ও নজরদারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে ডিসিদের কাছে পাঠানো হয়েছে চিঠি।
চিঠিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, বাংলাদেশে গত আলুর মৌসুমে প্রায় ১ দশমিক নয় কোটি মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। দেশে মোট আলুর চাহিদা প্রায় ৭৭ দশমিক নয় লাখ মেট্রিক টন। এতে দেখা যায় যে, গত বছর উৎপাদিত মোট আলু থেকে প্রায় ৩১ দশমিক ৯১ লাখ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থাকে। কিছু পরিমাণ আলু রপ্তানি হলেও ঘাটতির আশঙ্কা নেই।