নৌ পথের নৈরাজ্য বন্ধে জাহাজ মালিকদের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৩ জানুয়ারি): নৌ পথের নৈরাজ্য, নিয়মনীতি বহির্ভুত সব ধরণের কর্মকান্ড বন্ধ সহ আটদফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের জাহাজ মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষন ঐক্য পরিষদ।
শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সকল জাহাজ দিয়ে সারা বাংলাদেশে নৌপথে পণ্য পরিবহন করে থাকি। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য পরিবহনকারী মাদার ভেসেল হতে লাইটার জাহাজ দিয়ে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী জাহাজের মাধ্যমে সারাদেশে পণ্য পরিবহন করে থাকি।
চট্টগ্রাম আউটার হতে সারাদেশে পণ্য পরিবহনের জন্য রয়েছে ডি জি শিপিংয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন ডাব্লিউটিসি, যা ২০১৩ সালে গেজেট আকারে প্রাকাশিত হয়। আমরা সাধারণ জাহাজ মালিকগণ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ও ডাব্লিউটিসি’র নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়াল মোতাবেক পণ্য পরিবহন করলেও কতিপয় ফ্যাক্টরির মালিক, পণ্যের এজেন্ট ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ি সিরিয়াল বিহীন জাহাজ চালাচ্ছেন। তার অবৈধভাবে প্রতিমাসে ৪/৫ ট্রিপ পণ্য পরিবহন করলেও আমরা ২/৩ মাসে ১ ট্রিপও পণ্য পরিবহন করতে পারছি না।
বক্তরা জানান, ডাব্লিউটিসি’র গেজেট মোতাবেক ফ্যাক্টরির মালিকগণ তাদের আমদানিকৃত পণ্য নিজস্ব জাহাজ দিয়ে ৫০% পরিবহন কথা থাকলেও তারা ঢালাওভাবে তাদের জাহাজ দিয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে পণ্য পরিবহন করে চলেছে। শুধু তাই নয়, তারা চার্টারকৃত জাহাজ দিয়েও পণ্য পরিবহন করছে। সিরিয়ালভুক্ত জাহাজ মালিকদের হক আত্মস্যাৎ করে কালো টাকার পাহাড় বানিয়েছে। এরপর রয়েছে অবৈধ বালুবাহী বাল্কহেড। শুধুমাত্র খাল ও ছোট নদীতে বালু পরিবহনকারী বাল্কহেডগুলে সমুদ উপকুল অতিক্রম করে বহিঃনোঙ্গর হতে অবৈধভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে পণ্য পরিবহন করছে।
এ প্রেক্ষিতে নৌপথে পণ্য পরিবহনের নীতিমালা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সিরিয়াল বিহীন জাহাজ অবৈধ বাল্কহেড বন্ধ করতে আমরা বহু সভা করেছি। নৌপথে আন্দোলন করেছি। ডি জি শিপিংয়ে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন, ফ্যাক্টরির মালিক, আমদানিকারক, লোকাল এজেন্ট ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বহু মিটিং করা হয়েছে। কিন্তু অবৈধ জাহাজ, অবৈধ বাল্কহেড এর চলাচল বন্ধ হয়নি।
অবৈধভাবে সিরিয়াল বিহীন জাহাজ, অবৈধ বাল্কহেডে পণ্য পরিবহন, বেÑক্রসিং দফায় দফায় সভা করে সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না। করা সহ সমস্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা বহু আবেদন নিবেদন করেছি। নৌপথে প্রতিবাদ সভা করেছি। সংবাদ সম্মেলন করেছি। কোন কিছুতেই কোন কাজ হয়নি। কাজেই পণ্য পরিবহনেরর ব্যবস্থা সচল রাখতে, সামগ্রীকক মূল্য স্থিতিশীল রাখতে, সরাকারি নৌ নীতিমালা অনুযায়ী জাহাজ মালিকদের রক্ষা করতে আন্দোলন ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা নেই।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে তারা বলেন, নৌ পথের নৈরাজ্য, নিয়মনীতি বহির্ভুত সকল কর্মকান্ড বন্ধ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করে নৌ সেক্টরকে রক্ষা করুন।
এরপর তারা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচিতে জানানো হয়, ২৬ জানুয়ারি ডি জি শিপিং এর মহাপরিচালক বরাবরে স্মারক লিপি দেয়া হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি মানা না হলে সারা দেশে জাহাজ পরিচালনা বন্ধ থাকবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানান।