বকেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের ‘বিশেষ সুবিধা’ বাতিল
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
বাংলাদেশ ব্যাংক (ফাইল ফটো)
ঢাকা(৩১ জানুয়ারি): মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গেল বছর সকল শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য ঋণের কিস্তি পরিশোধের যে ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়া হয়েছিলো, তা বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমতবস্থায় এই ম,াস থেকে কেউ ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে আগের নিয়ম অনুযায়ী তিনি খেলাপি হবেন। তবে বকেয়া কিস্তি পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা এক সার্কুলারে এই তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংর্কাস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে গত বছরের পর পর তিনটি কোয়াটারে আমরা ঋণ আদায় করিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সার্কুলার ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো হয়েছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এ প্রসঙ্গে বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে বলেন, ব্যাংকাররা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তিনি বলেন, এই সুবিধা গণহাওে দেওয়ার কারণে অনেকে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা এই সুবিধা নিয়েছে। এখন এই সার্কুলারের ফলে ব্যাংক ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে খেলাপি ঋণ আদায় হবে।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করেছিলাম আগামি জুন পর্যন্ত এই সুবিধা বাড়ানোর জন্য। যেহেতু এখনও মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই আমরা আশা করবো ব্যাংকগুলো আমাদের যথাযথ সহযোগিতা করবে। আর যদি তা না হয় সেক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আবার বসবো।
জারি করার সার্কুলারে বলা হয়েছে, অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতার উপর এর প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখতে গেল বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের সার্কুলারের মাধ্যমে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ শ্রেণিকরণে ডেফারেল সুবিধা দেওয়া হয়েছিলো। যা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আর বর্ধিত না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, ঋণ বা বিনিয়োগের কিস্তি পরিশোধ সহজ করার লক্ষ্যে নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যমান ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতার উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব ও ঋণ বা বিনিয়োওে বকেয়া স্থিতির পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কেও ভিত্তিতে কেবলমাত্র মেয়াদি ঋণ বা বিনিয়োগ হিসাবের অবশিষ্ট মেয়াদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি করা যাবে। তবে এরূপ বর্ধিত সময়সীমা কোনভাবেই দুই বছরের অধিক হবে না।
এছাড়া অন্যান্য ঋণ বা বিনিয়োগ আদায়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা এবং বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ বা বিনিয়োগ আদায়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা অনুসরণীয় হবে। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গেল ডিসেম্বর মাসে ব্যবসায়ীদেও শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মেয়াদ আগামী জুন পর্যন্তÍ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনরকে চিঠি দিয়েছিলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।