করোনা মহামারীতে বেড়েছে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপি
আহমেদ শাওকী || বিজনেস ইনসাইডার
ইনফোগ্রাফ: বিজনেসইনসাইডারবিডি
ঢাকা (০৩ ফেব্রুয়ারি): মহামারী করোনার কারণে দেশে ক্রেডিট কার্ডের খেলাপির সংখ্যা বেড়েছে। বৃদ্ধিও এই হার ২০ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে, একইসময়ে নতুন ক্রেডিট কার্ড ইস্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
সংশিষ্টরা জানান, দেশে ক্রেডিট কার্ডের খেলাপির সংখ্যা কমে যাওয়া অন্যতম কারণ হচ্ছে মহামারী করোনা। এই সময় অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের বেতন কমে এসেছে।
বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংকের কার্ড অপারেশন বিভাগের প্রধান আহসানউল্লাহ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে জানান, অন্যান্য ঋণ গ্রহীতাদের মতো কার্ড ব্যবহারকারীরাও গেল বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের স্থগিতাদেশ পেয়েছিলেন। এজন্য ব্যাংকগুলি খেলাপি ঋণের হার নির্ধারণ করতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, অবশ্যই ঋণ খেলাপির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমরা মার্চ মাসের মধ্যে এর প্রকৃত চিত্র জানতে পারবো।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মহামারী করোনা শুরুর আগে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপি ছিলো গড়ে ৯ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ। আর করোনাকালে এই হার বেগেড় দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশেরও বেশি। তবে ব্যাংকগুলোর ৩১ ডিসেম্বরের পরে নতুন করে ক্রেডিট কার্ড খেলাপির সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, নতুন ক্রেডিট কার্ড ইস্যুর সংখ্যা গেল বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ছিলো ৯৫ হাজার। যা ২০১৯ সালে ছিল ২ লাখ ১ হাজার। একইসময়ে ক্রেডিড কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। আর ২০১৯ সালে ছিল ১৩ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ক্রেডিট কার্ডের কিস্তি পরিশোধের হার কমে যায়। যেকারণে
ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপির সংখ্যা বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ব্যাংক গুলোও ‘ধীরে চল’ নীতি অবলম্বন করে। এছাড়া করোনার কারণে অনেকের আর্তিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নতুন ক্রেডিট কার্ড নিতে চাননি অনেকে। এখনও এই অবস্থা বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি ব্যাংকের কার্ড বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্থগিতাদেশের কারণে অনেক কার্ড ব্যবহারকারী কিস্তি পরিশোধ করেনি। ফলে মহামারী সময়ে ক্রেডিট কার্ডের খেলাপি সংখ্যা বেড়েছে। ক্রেডিট কার্ডে গড়ে ঋণ খেলাপির হার ২০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগই হচ্ছেন চাকরিজীবি। মহামারীর কারণে গত বছর তারা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছেন। লোকজন চাকরি হারিয়েছে বা কর্মস্থলে অনেকের বেতন কমে গেছে।
প্রসঙ্গত, গেল ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের জন্য গড় সুদের হার ২৫ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশের মধ্যে ছিল। পরে অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সুদ ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়।