চাল আমদানিতে সরকারি ক্রয় নীতিমালায় সংশোধন আনা হচ্ছে : অর্থমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
ঢাকা (১০ ফেব্রুয়ারি): চাল আমদানিতে সরকারি ক্রয় নীতিমালায় সংশোধন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চাল আমদানিতে আমরা বাস্তবায়ন, পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) বলে দিয়েছি তাদের বিধিতে সংশোধনী আনার জন্য। বিধিতে সংশোধনীটি আসলে আমরা এই কাজটি করতে পারবো।
বুধবার বিকালে অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ৫ম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ৬ষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য ৩টি এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য ৫টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও দুইটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এসময় চাল আমদানির বিষয়গুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানি হবে। ওই প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে নিয়ে আসবে। আইনি সক্ষমতার কিছু ঘাটতি ছিল। সেখানে এগুলো আইনে বলা আছে যে টেন্ডারের বাইরে কম সময় দিয়ে কোন জিনিস কিনতে পারবো না। এটা ছিল অভ্যন্তরীণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে, এটা আসবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। আমরা বাস্তবায়ন, পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) বলে দিয়েছে তাদের বিধিতে সংশোধনী আনার জন্য। বিধিতে সংশোধনীটি আসলে আমরা এই কাজটি করতে পারবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমইডি আমাদের পাবলিক প্রকিউরম্যান্ট বিধি সময় সংক্রান্ত বিষয়টি সংশোধন করবে। অন্য কিছু না। অন্য কোনো জিনিস আমরা স্পর্শ করি নাই। আন্তর্জাতিক টেন্ডার করার পরে ৪০ থেকে ৪২ দিন অপেক্ষা করার কথা বলা ছিল। কিন্তু কিছু পণ্য আছে যেমন পেঁয়াজ, চাল, তেল এজাতীয় জিনিস আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিনই বাড়ে কমে। সেখানে এতো লম্বা সময় কোন টেন্ডার অপেক্ষা করেনা। প্রাইস একটিভ রাখার জন্য যে সময়টা যথাযথ মনে করি তা হচ্ছে ম্যাক্সিমাম ওয়ান উইক। উইদিন দিস টাইম তারা প্রাইস জানাবে। আমরা আমাদের দিক থেকে প্রকিউরম্যান্টের যেসব নিয়ম কানুন সেগুলো ফলো করবো। এলসি খুলবো, আরও যা যা করার দরকার সেগুলো করবো। যাতে তারা যেন এগুলো দেখে হাতে নিয়ে তারপর শিপমেন্ট করতে পারে।
তিনি বলেন, বাস্তবায়ন, পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) আইন ও বিধি সংশোধন সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনে আছে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ মার্কেট থেকে কিছু কিনলে প্রয়োজনের সময় কমানো যাবে। আন্তর্জাতিক প্রকিউরমেন্ট সম্পর্কে কিছু বলা ছিলনা। আমরা বুঝতে পারলাম আন্তর্জাতিক বাজার অত্যন্ত ভলাটাইল। চাল, তেল, গমসহ এসব জিনিসের দাম উঠানামা করে খুব দ্রুত। সেজন্য কম সময় দরকার এখানে। বেশি সময় দিলে পরে আমরা কমপিটিটিভ প্রাইস পাবো না। আন্তর্জাতিক বিডাররা বিড করবে না। সেজন্য আমরা আইনটা সংশোধন করছি।
এর আগে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে দুইটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ভারতের এনসিসিএফ ( ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ কনজুমার্স ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড) থেকে ক্রয়ের নীতিগত থেকে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রুয়োজনে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে চাল ও গম আমদানির লক্ষ্যে ক্রয় প্রক্রিয়ার সময় হ্রাস করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।