পাট ও টেক্সটাইল মিলে আর সহায়তা দেবে না চীন
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
পাট খাতে আর কোন ঋণ সহায়তা দেবে না চীন
ঢাকা (২৩ ফেব্রুয়ারি): রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাট এবং টেক্সটাইল মিল খাতে চীন বাংলাদেশকে আর সহযোগিতা করবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশকে লেখা এক চিঠিতে এ কথা জানিয়েছে চীন ।
সম্প্রতি নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) জন্য আর কোন ঋণ নেয়া হবে না বলে সরকারি সিদ্ধান্তের পর পরই চীন ক্ষুব্ধ হয়েই এ খাতে সহযোগিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তর পরপরই চিঠি দিয়ে চীন নিজের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়েছে।
এর আগে সরকারের অধীনস্থ পাটকলের ‘সমতা, আধুনিকায়ন, পুনর্বাসন এবং সম্প্রসারণ (বিএমআরই)’ প্রকল্পটি চীনের সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এতে সহযোগিতার করতে চীন সম্মতও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পরে এটা নিয়ে অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
চলতি মাসের ২ ফেব্রুয়ারি সরকারকে দেওয়া বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যিক কাউন্সিলর লিউ শিংহুয়া স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যেহেতু এককভাবে এ প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই চীনের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পাট এবং টেক্সটাইল মিলের খাতে আর কোন ধরনের সহযোগিতা করা হবে না।
এ বিষয়ে বিজেএমসির চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে বলেন, চীনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। তিনি বলেন, জিটিুজি পর্যায়ে অর্থায়নের বিষয়টি অব্যহত না রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের। গেল বছরের জুলাই থেকে আমাদের পাটকলগুলো বন্ধ রয়েছে। এ খাতে বিকল্প অর্থায়ন নিয়েও আমরা সমস্যায় রয়েছি।
২০১৬ সালের অক্টোবরে চীন ও বাংলাদেশ ২৪টির বেশি কৌশলগত সহযোগিতার সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এসব সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছিলেন। এর আওতায় ২০১৬-২০২০ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল।
বাংলাদেশে চীনের অর্থায়নের মধ্যে ব্যয়বহুল এবং সহজ শর্তের ঋণ- দুটোই রয়েছে। বর্তমানে চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে পদ্মা রেলসংযোগসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে।
গেল এক দশকে সমস্যায় জর্জরিত বিজেএমসিকে বাঁচাতে সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নেয়। বিএমআরই প্রকল্পের আওতায় চীন এসব প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকার আগ্রহ দেখিয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এক পর্যায়ে বাংলাদেশ পিছু হটে এবং বিজেএমসির জন্য চীন থেকে শর্তসাপেক্ষে কোন তহবিল না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিজেএমসির অধীনস্থ ২২টি পাটকল আর্থিক ভাবে লাভবান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার গেল এক দশকে ৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে উন্নতির বদলে হয়েছে লোকসান। গেল বছর জুলাই মাসে সরকার বিজেএমসির সব মিল পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করে লে অফ ঘোষণা করে।