রপ্তানীমুখী শিল্পে প্রণোদনার ঋণ পরিশোধের সময় ৬ মাস বাড়লো
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: দেশের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করছেন, বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা(২৩ ফেব্রুয়ারি): করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানীমুখী শিল্পে প্রণোদনার ঋণ ও সুদ পরিশোধে আরো ছয় মাস সময় পেল রপ্তানীমুখী শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে এই ঋণ ও সুদ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড রয়েছে ছয় মাস, যা গত জানুয়ারি মাসে শেষ হয়েছে। এখন তা আরো ছয় মাস বাড়িয়ে এক বছর করা হয়েছে।
তবে ঋণের সুদ-আসল আগের মতো ১৮ কিস্তিতেই পরিশোধ করতে হবে। আগে ঋণ দুই বছরে পরিশোধ করার কথা ছিল। রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য গত সোমবার অর্থ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। ১ হাজার ৯৯২ পোশাক শিল্পের ৩৫ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীকে এ তহবিলের প্রায় পুরো অর্থাৎ ৪ হাজার ৯৩৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এ তহবিল থেকে ঋণের জন্য উদ্যোক্তাদের মাত্র ২ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, রপ্তানীমুখী শিল্পের শ্রমিকদেও বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আগামী ১ মার্চ থেকে পরবর্তী ছয় মাস প্রেস পিরিয়োড বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হলো। এ জন্য প্যাকেজ সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতেও অনুরোধ করা হয়।
জানা গেছে, তৈরী পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদেও বেতনভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঋণ পরিশোধে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণের পুরো অর্থ শোধ করতে তারা দুই বছর পাবে। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ছয় মাস। এরপর দুই বছরে ১৮ কিস্তিতে ঋণের টাকা শোধ দিতে হবে। কিন্তু গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার আগেই তৈরী পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের কারণে ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল, স্থগিত, নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না দেয়া ইত্যাদি কারণে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিজিএমইএর অবস্থা তুলে ধরে গত বছরের শেষ দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। চিঠিতে করোনা পরিস্থিতির কারণে সচল শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদেও বেতনভাতার জন্য দেয়া ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ছয় মাসের পরিবর্তে এক বছর করা এবং দুই বছরে ১৮ কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের পরিবর্তে পাঁচ বছরে ৬০টি কিস্তির সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করা হয়।
এরপর বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করে বিজিএমইএ। শেষ পর্যন্ত ঋণের গ্রেস পিরিয়ড আরো ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।