করোনাভাইরাসের প্রভাব: বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমান কমছে
বিআই ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: ফাইল ফটো
ঢাকা (৩ নভেম্বর): বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে পোশাক শিল্পে বিরূপ প্রভাবে কারণে হ্রাস পেয়েছে রপ্তানির পরিমাণ। রপ্তানি পণ্যের পরিমান গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এ বছর অক্টোবরে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। সোমবার এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) দেয়া তথ্যে এ কথা জানা গেছে।
ইপিবির তথ্যে দেখা গেছে, গত মাসের রপ্তানির মাসিক লক্ষ্যমাত্রা ৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার হলেও সেটা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কম হয়েছে। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম চারমাস জুলাই থেকে অক্টোবরে রপ্তানির পরিমান গত বছরের একই সমেয়ে চেয়ে দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ১২ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
দেশের মোট রপ্তানির ৮৪ শতাংশ বলে বিবেচিত পোশাক রপ্তানি এ চারমাসে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১০ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবরে নীটওয়্যার রপ্তানি গত বছরের একই সমেয়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে অর্জণ করেছে ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ওভেন পোশাক রপ্তানি ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যাওয়া এবং পরপর সাত মাস রপ্তানির পরিমান হ্রাস পাওয়ার পর আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে সেটা উর্ধ্বমুখি হওয়া বেশ ইতিবাচক। তিনি বলেন, পোশাক রপ্তানি অক্টোবরে ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী চাহিদা এবং ব্যবসার মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠারই বহিঃপ্রকাশ। ওভেন পোশাক খাতের রপ্তানি হ্রাস পোশাক রপ্তানিতে প্রভাবের বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রুবানা হক বলেন, অক্টোবরের দেশ ভিত্তিক রপ্তানির তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে জুলাই সেপ্টেম্বরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে রপ্তানি সবচেয়ে বেশি ব্যহত হয়েছে নন ট্রেডিশনাল মার্কেটে। অথচ ইইউ এবং যুক্তরষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি স্থিতিশীল ছিল। এটা বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, ইউরোপে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম এবং গ্রীসসহ বিভিন্ন দেশে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে ইইউর পোশাকের চাহিদা মেটানো বেশ কষ্টকর হবে। ইউরোপ আমাদের বড় বাজার বলে বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
অক্টোবরে বাংলাদেশে তৈরী পোশাক পণ্যের মূল্য গড়ে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কমে গেছে। আর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ মূল্য কমেছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
রুবানা হক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের গার্মেন্টগুলো আর্থিকভাবে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিল্প কারখানাগুলো সীমিতভাবে চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রেও খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় পণ্যের মূল্য কমার বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।
ইপিবির তথ্যে দখা যাচ্ছে, জুলাই অক্টোবর সময়ে পাট এবং পাটজাত পণ্য রপ্তানি ৩৯ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে ৪৩৮ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে, ২৮৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সরকার বর্তমান অর্থ বছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে ৪১ বিলিয়ন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা গত বছর অর্জিত রপ্তানি আয় ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।