কোভিড-১৯: ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিস্ময়কর উত্থান
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: ইন্টারনেট
ঢাকা (০২ মার্চ): মহামারির করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যখন টিকে থাকার লড়াই করছে, তখন দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা যেকোন সময়ের তুলনার বেড়েছে। অনলাইন কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং বাসায় থেকে কাজ করার প্রবনতার কারণেই এর প্রসার বেড়েছে।
দ্রুতগতি, সাশ্রয়ী মূল্য এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত সুবিধার কারণে সবাই এখন বাসাবাড়িতে কাজ করার জন্য মোবাইল ইন্টারনেটের চেয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকেই বেশি পছন্দ করে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট এম এ হাকিম বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে বলেন, করোনা মহামারি ব্যক্তি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মানসম্পন্ন ইন্টারনেটের দিকে ধাবিত করেছে। এটা কেবল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সম্ভব।
তিনি বলেন, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশই ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আর বাণিজ্যিক যোগাযোগ, শিক্ষা এবং গবেষণার মতো উৎপাদনশীল কাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের তথ্যানুযায়ী এক বছরেই দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্রডব্যান্ড এবং পিএসটিএন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯৫ লাখ ২২ হাজারে পৌঁছেছে। এক বছর আগে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৭ লাখ ৪২ হাজার।
বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার কর্মী নিয়ে দেশের ১৯৯৫ টি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিমাসে গড়ে ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের সেবা দিচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেক্টরের প্রবৃদ্ধি আমাদের স্থিতিশীল ইন্টারনেট অবস্থারই প্রতিফলন। এ ক্ষেত্রেই আমাদের ফোকাস সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, এর আগে ব্রডব্যান্ড সেক্টরের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নানা ধরণের চ্যালেঞ্জ থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারি এর ক্ষেত্রই বদলে দিয়েছে।
এখন উপজেলা পর্যায়েও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) রয়েছে। তাই যে কেউ এখন গ্রামে বসেও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আইএসপিএবি মনে করে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সম্প্রসারণের মূল কারণ হচ্ছে লক ডাউনের সময় দেশেষ ই কমার্স বাণিজ্যের প্রসার। এছাড়া এ প্রবৃদ্ধির পেছনে অনলাইন ক্লাস এবং বাসায় বসে অফিসের কাজ করা এবং ভাচৃুয়াল বিনোদনও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।
দেশব্যাপী লকডাউনের সময় ই-কমার্সের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের পণ্য বিক্রি হয়েছে বলে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) জানিয়েছে।
ই-ক্যাব বলছে মহামারির আগে এ সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ছিল ১০০০। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে এ সংখ্যা ১ হাজার ৪০০টিতে উন্নীত হয়।
ই-ক্যাব বলছে, ই কর্মাসের বিভিন্ন কার্যক্রমের পরিধি আরো ব্যাপক। এর মাধ্যমে ৬০ লাখ মানুষ সরাসরি উপকৃত হয়েছে।