সিইপিএ’র জন্য সমীক্ষা চালাবে বাংলাদেশ-ভারত
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বিডি
ঢাকা (০৩ মার্চ): দু’দেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (কম্প্র্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট-সিইপিএ) এর জন্য যৌথ সমীক্ষা চালাবে বাংলাদেশ ও ভারত। বাংলাদেশ উন্নত দেশের তালিকাতে উন্নতি হলে সিইপিএ কাজে লাগানো হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ মাসের শেষের দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় সিইপিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।
২০২৪ সাল নাগাদ অনুন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কর সুবিধার রক্ষাকবজ হিসেবে বাংলাদেশ এ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গেল সপ্তাহে বাংলাদেশ এলডিসির অবস্থান থেকে উত্তোরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এখন বাংলাদেশের প্রকৃত অর্থনৈতিক চিত্র এবং প্রতিবেশি দুই দেশের প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধাগুলো খতিয়ে দেখা দরকার।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইন্সটিটিউট (বিএফটিআই) বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দীনের নেতৃতে গঠিত ১০ সদস্যের কমিটির মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়েছে। বাণিজ্য সচিব বলেন, বিএফটিআই এবং ইনডিয়ান ফরেন ট্রেড ইন্সটিটিউট সমীক্ষা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এলডিসি অবস্থা থেকে উত্তোরণে জাতিসংঘের সুপারিশের পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা হারাবে। এ কারণে ঢাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সহযোগিদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ), পছন্দনীয় বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ), সিইপিএ এবং আরো অন্য বাণিজ্য চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
দুমাস আগে বাংলাদেশ এবং ভুটান পিটিএ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য এ ধরণের প্রথম স্বাক্ষরিত কোন চুক্তি। গ্রাজুয়েশনের পর বাণিজ্য সুবিধা পেতে মন্ত্রণালয় আরো ১১টি দেশ এবং বাণিজ্য ব্লকের সঙ্গে এফটিএ বা পিটিএ স্বাক্ষরের লক্ষ্যে কাজ করছে। পিটিএ স্বাক্ষরের জন্য বাংলাদেশ ও নেপাল দুদেশই প্রস্তুত বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে বাংলাদেশ। গেল এক দশকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দৃঢ়তার সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর একই সময়ে আমদানির পরিমান ছিল ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রাস্তাঘাট, রেলওয়ে, জাহাজ এবং বন্দরসহ বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন এবং অবকাঠামো খাতে গেল আট বছরে ভারত বাংলাদেশকে তিন দফা লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) হিসেবে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে। ভারতের এলওসির সবচেয়ে বড় গ্রহীতা হচ্ছে বাংলাদেশ। আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ, নদীতে ড্রেজিংসহ বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশকে ভারত বড় ধরণের আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে।