আগামি সপ্তাহে নেপালের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর
বিশেষ প্রতিবেদন || বিজনেস ইনসাইডার
গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বিডি
ঢাকা (১৩ মার্চ): আগামি সপ্তাহে নেপালের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর হবে। এরইমধ্যে উভয় দেশ নিজ নিজ পক্ষে প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কমিটি আগামী ১৫ মার্চ বৈঠক করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পরে তা অনুমোদনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান।
এখানে উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি আগামী ২২ মার্চ ৫ দিনের সফরে ঢাকায় আসবেন। ওইদিনই তাঁর উপস্থিতিতে পিটিএ করতে উভয় দেশ প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ প্রসঙ্গে বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে বলেন, নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। এই সপ্তাহে এ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক আছে। তিনি বলেন, এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়বে। উভয়দেশ বেশকিছু সুবিধা ভোগ করবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, নেপালের সঙ্গে পিটিএ করার আলোচনা গেল বছর থেকেই শুরু হয়েছে। শুরুতে উভয় দেশই নিজ নিজ দেশের শতাধিকের বেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা শুরু করে। পরে কয়েকদফা আলোচনার পর বাংলাদেশের ৪০টি এবং নেপালের ২০টি পন্য নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা শুরু হয়।
এখন দু’দেশ শুল্কমুক্ত সুবিধায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সম্ভাব্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) উভয় দেশের ৬২টি পণ্যের বিষয়ে পর্যালোচনা করছে উভয় দেশ। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ থেকে নেপালে ৪২টি পন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার বা রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টস, পাটজাত, ব্যাটারি, টয়লেট্রিজ পণ্য, ওষুধ, সিরামিকস ও ইলেক্ট্রনিক্স ও খাদ্যপণ্য উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে, নেপাল বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ২০টি পণ্য রপ্তানি করতে চায়। এরমধ্যে রয়েছে কফি, চা, সিমেন্ট ক্লিংকার, বোতলজাত পানি এবং জুয়েলারি উল্লেখযোগ্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গেল মাসে ও চলতি মাসের শুরুতে নেপালের সঙ্গে পিটিএ করা নিয়ে কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওইসব বৈঠকে বাংলাদেশ নেপালের বাজারের জন্য ৪২টি পণ্যের নাম ও এইচএস কোড সম্বলিত তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নেপালকে পাঠিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশস্থ নেপালের রাষ্ট্রদূত নেপালও বাংলাদেশের সঙ্গে পিটিএ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ১৫ মার্চ এ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক শেষে একটি সার সংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে রফতানি বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ (প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট) এবং এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) করার জোর তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় নেপালের সঙ্গে পিটিএ করা হচ্ছে। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে ভুটানের সঙ্গে প্রথম পিটিএ চুক্তি করা হয়। এছাড়া শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পিটিএ’র অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর পাশাপাশি মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেসব বিষয়েও আলোচনা করা হবে।