‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতি ও সীমিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখা হোক’
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সিপিডি ‘শীর্ষক সংলাপে’র আলোচকগণ
ঢাকা (১২ এপ্রিল): বাংলাদেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। গত কয়েক সপ্তাহধরে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখ থেকে কড়া লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে।
এই লকডাউন চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং সীমিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘শীর্ষক সংলাপে’র আলোচকগণ।
আলোচকগণের অভিমত, গত বছরের লকডাউন সাধারণ মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি ও জীবিকার ওপর ঋণাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। এই সংকট এখনো কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমানের সংক্রমণ হার কমানোর জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভারসাম্য বজায় রাখাও এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সোমবার সিপিডি আয়োজিত “কোভিড অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ: কীভাবে সামলাব?” শীর্ষক সংলাপে আলোচকগণ এসব কথা বলেন।
শীর্ষক সংলাপে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই)-এর সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের করোনাভাইরাস নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে।’
বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে এ সময় তিনি আহ্বান করেন, সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
ব্র্যাকের সাবেক ভাইস চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক ডক্টর আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এর আগেও কোভিড-এর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টা থাকলেও তা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হয়নি।
বিজিএমইএ-এর নব-নির্বাচিত সভাপতি ফারুক হাসান মন্তব্য করেন, লকডাউনে পোশাক কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকরা অনেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য গনপরিবহন ব্যবহার করবেন, যা সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
শীর্ষ সংলাপে সিপিডি’র ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লকডাউনের অর্থনৈতিক একটি প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এটি সংক্রমণ ছড়িয়ে পরা রোধে বাধা দেবে।
তিনি আরও বলেন, জীবন ও জীবিকার মধ্যে এখন জীবনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এসেছে। এবং আমাদের জন্যস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সংলাপের শুরুতে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক, ড ফাহমিদা খাতুন সূচনা বক্তব্যে বলেন, গত বছরের থেকে এই বছর সংক্রমণের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরে আমরা দেখেছিলাম লকডাউন বেশ ঢিলেঢালাভাবে হয়েছিল। তিনি উৎপাদন প্রক্রিয়া চলমান রাখা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন— ডক্টর এ এস এম আলমগির, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর); ডক্টর মুশতাক হোসেন, উপদেষ্টা, আইইডিসিআর; ডক্টর এ এম শামীম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ল্যাবএইড লিমিটেড; তাসলিমা আখতার, সভাপ্রধান, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি; হেলাল উদ্দিন, সভাপতি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির ও ফারুক আহমেদ, মহাসচিব, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) ও সেক্রেটারি, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান সহ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক, গবেষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ অনেকে সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন।