সবজিতে উত্তাপ, চাল-ডালের দরও ঊর্ধ্বমুখী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (১২ জুন): সবজিতে উত্তাপ বেড়েই চলেছে। ডাল ও ফার্মের মুরগির দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে চাল ও বেশ কিছু মশলার দামও।
শনিবার রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাভারের গেণ্ডা কাঁচাবাজার, কারওয়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে, কাঁচা সবজির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। এদিকে, মোটা দানার মশুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এ ছাড়াও প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি তিন থেকে চার টাকা।
বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহ তুলনায় চলতি সপ্তাহের শুরুতেই প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি তিন থেকে চার টাকা। এ সপ্তাহে দাম বেড়ে আটাশ চাল প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া, ভারত থেকে আমদানি করা মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তায় দাম গত সপ্তাহে ২২ শ’ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ২৪ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা জানান, ধানের দাম বেশি থাকায় চালের দাম ফের বাড়তে শুরু করেছে। বিক্রেতাদের দাবি বড় বড় মিলার ও চাল ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার আশায় চাল মজুত করে রাখছে। বাজারে কৃত্রিম চালের সংকট দেখিয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করছে তারা। আর তাই খুচরা বিক্রেতাদেরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা চাঁদপুর ট্রেডার্সের ম্যানেজার মো. শহীদ বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে জানান, বড় বড় কোম্পানিগুলো ধান কিনে মজুত করছেন। চড়া দাম ছাড়া বাজারে চাল বিক্রি করছে না। এ ছাড়া, ধানের দাম বেশি থাকায় চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
তিনি আরও জানান, ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ থাকার সুযোগে ৫০ কেজি মোটা চালের বস্তায় ২ শ’ টাকা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন তারা।
এ ছাড়াও ভারতের মোটা দানার মশুর ডাল ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, চিকন দানার দেশি মশুর ডাল ১২০ টাকা থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
অপরদিকে, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ১৫ থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকা কমে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শসা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হলেও শনিবার প্রতি কেজি শসা ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৪০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, পটল ৩০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।
ঢেঁড়সের দাম বেড়েছে প্রায় দিগুণ। গত সপ্তাহে ৩০ টাকা বিক্রি হলে এ সপ্তাহে ৩০ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এ ছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে টমেটো, মরিচের দাম। গত সপ্তাহের দামে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা।
সাভারের গেণ্ডা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে জানান, সবজির দাম সব-সময় ওঠা-নামা করে। তবে এ সপ্তাহের শুরুতেই প্রায় সব ধরনের সবজিতে ১৫ থেকে ২৫ টাকা করে দাম বেড়েছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাভারের গেণ্ডা কাঁচাবাজার, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কিছু দিন বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে, দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও টানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন সবজির গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাম বাড়ছে।
অপরদিকে, চলতি সপ্তাহে ফার্মের মুরগির দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। এ সপ্তাহে ফার্মের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। দেশি ও পাকিস্তানি কর্ক মুরগি গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজি এবং পাকিস্তানি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এ ছাড়া, গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা।
কারওয়ানবাজার ও সাভার গেণ্ডা কাঁচাবাজারের মুরগি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশি ও পাকিস্তানি মুরগির সরবরাহ রয়েছে তবে ফার্মের মুরগির চাহিদা বেশি থাকার ফলে দাম একটু বেশি।