জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-বৃটেন বাণিজ্য বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ঢাকাস্থ বৃটেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় (সংগৃহীত)
ঢাকা(০৩ ডিসেম্বর) : আগামী বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ বৃটেনের মধ্যে জি-টু-জি বাণিজ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রী নিজের সরকারি বাসভবনের অফিসে ঢাকায় নিযুক্ত বৃটেনের রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টনডিকসন এর সাথে মতবিনিময়ের সময় এই বৈঠকের কথা জানান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এথত্য জানানো হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশে সাথে বৃটেনের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বৃটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। বৃটেন ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন থেকে আলাদা (ব্রেক্সিট) হবার পর নতুন বাণিজ্য নীতিতে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়া হবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ব্রেক্সিট পররর্তী বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বৃটেনের আগ্রহে বাংলাদেশ উৎসাহবোধ করছে। নতুন উদ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সঠিক পথে পরিচালনার জন্য উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা জরুরি। আগামী জানুয়ারি মাসেই উভয় দেশের মধ্যে জি টু জি বাণিজ্য বৈঠকের আয়োজন করা হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৃটেনের অনেক বিনিয়োগ বাংলাদেশে রয়েছে। আরও বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারতসহ বেশ কিছু দেশ সেখানে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীগণ এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ-বৃটেন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করবে।
তিনি বলেন, আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবে। এ সময় বৃটেন বাংলাদেশকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে চলমান সুযোগ-সুবিধাগুলো প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছি। বিভিন্ন দেশের সাথে পিটিএ এবং এফটিএ করে বাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা শুরু করেছে।
বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বৃটেনে পড়া লেখা করে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য বৃটেনে যান। অনেকেই ইচ্চা থাকার পরও আর্থিক কারনে সেখানে যেতে পারেন না। বৃটেন বাংলাদেশে একটি বিশ^মানের বিশ^বিদ্যালয় গড়ে তুললে বাংলাদেশের আরও অনেক শিক্ষার্থ সেখানে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে।
বৃটেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রেক্সিট পররর্তী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃটেন বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈঠক করে এ বিষয়ে বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকারের সাথে বৃটিশ সরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের সাথে বৃটেনের চলমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকবে এবং আগামীতে তা আরও বাড়ানোর প্রচেষ্টা থাকবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃটেন বাংলাদেশকে অধিক গুরুত্ব দেয়।
উল্লেখ্য, বৃটেন বাংলাদেশে রপ্তানির একটি বড় বাজার। গত অর্থ বছর বাংলাদেশ বৃটেনে রপ্তানি করেছে ৪৫৩.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ৪১০.৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। উভয় দেশের মধ্যে এ বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে।