দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বিটিভির সৌজন্যে
ঢাকা (১৭ জানুয়ারি): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি শিশুদের জন্য বেশি বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন। রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সিনেমা হলে দর্শক ফেরানোর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও দক্ষ হতে হবে। বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে হবে দেশের চলচ্চিত্রকে।’
অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার একটা দুঃখ থেকে গেলো, আমি নিজে উপস্থিত থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সবার হাতে তুলে দিতে পারলাম না। এটা আমার জন্য খুব কষ্টের। তারপরেও আমি আশা করি, এই করোনার হাত থেকে আমরা মুক্তি পাবো এক দিন। আবার আমরা সবাই এক হতে পারবো।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনার কারণে আসলে আমি একরকম বন্দি জীবন যাপন করছি। আজকে বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে বলেই এভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারলাম।’
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ২৬টি বিভাগে ৩৩ জন শিল্পীর মাঝে সম্মানজনক এই পুরস্কার হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে দেশের চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে তথ্য মন্ত্রণালয়। চলচ্চিত্র জগতে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পান মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।
সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে যৌথভাবে পুরষ্কার পেয়েছে 'ন ডরাই' ও 'ফাগুন হাওয়ায়' সিনেমা।
'আবার বসন্ত' ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান তারিক আনাম খান এবং 'ন ডরাই' ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান সুনেরাহ বিনতে কামাল। 'সাপলুডু'র জন্য শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন জাহিদ হাসান।
এছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ এর অন্যান্য ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের তালিকা:
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিলো অন্ধকারে
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন'ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা: ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী: নারগিস আক্তার (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান ইমন (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃণাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো- শাটল ট্রেন)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মমতাজ বেগম ও ফাতিমা-তুয যাহুরা ঐশী।
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার- কালো মেঘের ভেলা) ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (চল হে বন্ধু- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: প্লাবন কোরেশী (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল- মায়া দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার: মাসুদ পথিক (মায়া-দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন' ডরাই)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমেদ হালিম (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বসু ও ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন' ডরাই)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন' ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা: খন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: রাজু (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্যসচিব খাজা মিয়া।