আজ নায়ক রাজের জন্মদিন
|| বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৩ জানুয়ারি): গেঞ্জি পরা একটা ছেলে বেঞ্চের ওপর বসা। চিত্রপরিচালক জহির রায়হানকে দেখে ছেলেটি উঠে দাঁড়াল। কাছে গিয়ে ছেলেটির পিঠ চাপড়ে তিনি বললেন, “আপনি তো অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। যান, আপনাকে হিরো বানিয়ে দিলাম। বেহুলা ছবির নায়ক লখিন্দর চরিত্রে অভিনয় করবেন। আর ইনিই আপনার নায়িকা।” রাজ্জাক হঠাৎ চুপ হয়ে গেলেন। চোখ ছলছল করে উঠল। পা ছুঁয়ে সালাম করলেন।
প্রথমবারের মত নায়কের চরিত্রে অভিনয় করলেন সেই ছেলেটি। আমরা পেলাম এক নায়ক রাজ্জাক।‘বেহুলা’ সিনেমাতে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন নায়ক রাজ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। দর্শকদের জন্য উপহার দিলেন নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ, যে আগুনে পুড়ি, জীবন থেকে নেয়া, বড় ভালো লোক ছিল, রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, এর মত ছবি।
আজ সেই মহানায়কের ৭৯ তম জন্মদিন। পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৪২ সালের আজকের দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিঁনি। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে রাজ্জাক তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছা নিয়ে রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়ে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন।
এরপর কলকাতায় ফিরে এসে শিলালিপি ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক তার পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে রাজ্জাক ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত হাসির সিনেমা ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাক ঢাকায় তার অভিনয় জীবনের সূচনা করেন। এরপরই তিনি সুযোগ পান জহির রায়হানের বেহুলায়। ৬০-এর দশকের শেষ থেকে ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা এই নায়ক উপহার দিয়েছেন ৩ শ’রও বেশি ছবি।
আজ তাঁর শুভাকাঙ্খীরা নানান আয়োজন আর স্মৃতিচারণে দিয়ে জন্মদিন পালন করছেন। কিন্তু কোথাও যেন একটা শূন্যতা রয়েই যায়। জীবনের মানচিত্রে বহুপথ পাড়ি দিয়ে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি।