খাবার নিয়ে যত ‘মিথ’
ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা (৩০ জানুয়ারি): ভোজনপ্রেমীদের ভালবাসার জায়গাটাতে শুরুতেই বাঁধ সেধে বসে সুস্বাস্থ্য। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাওয়া নিয়ে শুরু হয় যত বিধি নিষেধ। আর ওজনের কথা চিন্তা করে সব জলাঞ্জলী দিয়ে এক যুদ্ধে নেমে পড়েন খাদ্যবিলাসীরা। কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেসব প্রচলিত নিয়ম আপনি মেনে চলছেন তার সবই কি ঠিক?
আমেরিকার কিছু পুষ্টিবিদ এবং গবেষণা থেকে এমন কিছু ‘মিথ’ সম্পর্কে জানা যায় যেগুলো হরহামেশাই আমরা মেনে থাকি নিজেদের সুস্থ রাখব বলে। তেমনি কিছু মিথ হলো-
ফ্যাট ফ্রি দুগ্ধজাতীয় খাবার স্বাস্থ্যসম্মত
দোকানে গিয়ে প্যাকেটের গায়ে ‘ফ্যাট-ফ্রি’ লেখা খোঁজা এবার ছাড়ুন। কারণ খাবারের এই ফ্যাট আপনাকে মোটা করেনা। বরং ফ্যাট ছাড়া কোন কোন খাবারের স্বাদ খুবই বাজে হয়। তাই অধিকাংশ লো-ফ্যাট দই বা দুগ্ধজাতীয় খাবারগুলোতে স্বাদ বর্ধনের জন্য চিনি ব্যবহার করা হয়। যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কারণ চিনি অনেক রোগের সৃষ্টি করে এবং ওজন বাড়ায়। তাই যদি দই বা দুধ জাতীয় খাবার খেতেই হয় তাহলে লো-ফ্যাট ভার্সন এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
ডিমের কুসুম কোলেস্টরল বাড়ায়
অনেক প্রচলিত একটা ধারণা হচ্ছে ডিমের কুসুম রক্তে কোলেস্টরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা যায় ডিমের কুসুমের সাথে কোলেস্টরল বাড়ার কোন সম্পর্ক নেই। বরং এতে কোলিন নামক একধরণের উপাদান রয়েছে যা শরীরে কোষের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্য উপকারি।
কিছুক্ষণ পর পর খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল
প্রতি দুই ঘন্টা বা তিন ঘন্টা পর পর খাবার খেলে তা শরীরের বিপাকীয় কাজকে কার্যকর রাখে বলে একটা বিতর্ক আছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পর খেলে তা শরীরের জন্য আসলেই কি উপকারী? দেখা যায় কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বেশি খাওয়া কেবল ক্ষুধাই তৈরি করে। সিলভারম্যান, আমেরিকার একজন পুষ্টিবিদ জানান আমাদের যে পরিমাণ ক্যালরির প্রয়োজন কেবল ততটুকুই গ্রহণ করা উচিত। এর বেশি নয় । তিনি বলেন দীর্ঘ সময় পরে খাবার খাওয়া বা কখনো কখনো উপবাসও শরীরে শক্তি তৈরি করতে ও ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
শর্করার পরিমান কমানোই ওজন কমানোর উপায়
খাবারের তালিকায় শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ওজন কমানো একটি অধিক প্রচলিত প্রক্রিয়া। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে কখনো উচ্চ শর্করা সম্বলিত ডায়েট চার্টও ওজন কমাতে কার্যকরী।
কারণ সবধরণের শর্করা এক নয়। শর্করার অনেক ধরণ আছে। যেমন ধরুন ফুলকপি আর চকলেট আইসক্রিমের কথা। দুটোই শর্করার দলে থাকলেও দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের দুটো খাবার। এমনকি অধিকাংশ উদ্ভিজ খাবারই শর্করাপূর্ণ। কিন্তু এই ধরণের উদ্ভিজ শর্করা হচ্ছে ‘স্লো শর্করা’। যেগুলো আপনার শরীরে চিনি অথবা ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করেনা। এই স্লো শর্করা গুলো পুষ্টি আর দারুণ সব ফাইটোক্যামিকেলস নামক অনু সমৃদ্ধ। তাই কত পরিমাণ নয়, বরং কোন গুণাবলী সমৃদ্ধ শর্করা খাচ্ছেন সেটাই হল বড় কথা।
সকালের নাস্তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
পুষ্টিবিদ সিলভারম্যান এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় নিজের শরীরের কথা শোনা উচিত এবং যখন ক্ষুধা লাগে ঠিক তখনই খাওয়া উচিত। তাদের মতে সকালই আমাদের দিনের শুরুটা নির্ধারণ করে। কিন্তু যদি আপনি ক্ষুধার্ত না থাকেন তাহলে সকালে শুধু শুধু বেশি করে খাওয়ার কোন দরকার নেই। অনেকেই আছেন যারা ক্ষুধা নিয়ে ঘুম থেকে উঠেন না বরং তারা ব্রেকফাস্ট না খেয়েও স্বস্তি বোধ করেন।