প্রিডায়াবেটিস রয়েছে বুঝবেন যেভাবে
বিআই ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (৩ নভেম্বর): ডায়াবেটিস নিয়ে আমাদের সবার সচতেন থাকা উচিৎ। প্রিডায়াবেটিস হচ্ছে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের পূর্বাবস্থা। প্রিডায়াবেটিস একজন মানুষকে এই সতর্ক সংকেত করে দেয় যে, তিনি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের খুব কাছাকাছি আছেন।
অধিকাংশ মানুষেই জানেন না যে তাদের প্রিডায়াবেটিস রয়েছে। কারণ সাধারণত এই অবস্থাতে উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত প্রিডায়াবেটিস যখন টাইপ ২ ডায়াবেটিসে রূপ নেয় তখন উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকে। প্রিডায়াবেটিসের একটি সম্ভাব্য লক্ষণ হলো শরীরের কিছু অংশে ত্বক কালো হয়ে যাওয়া, যেমন- ঘাড়, বগল, কনুই, হাঁটু ও আঙুলের জয়েন্ট।
এছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসের অনুরূপ উপসর্গও দেখা দিতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হচ্ছে- ঘনঘন মূত্রত্যাগ, অতিরিক্ত পিপাসা, অতিরিক্ত ক্ষুধা, ক্লান্তি ও ঝাপসা দৃষ্টি। যেহেতু বেশিরভাগ লোকের ক্ষেত্রে প্রিডায়াবেটিসের উপসর্গ প্রকাশ পায় না, তাই নিয়মিত রক্ত শর্করা চেক করে নেয়া ভালো। এর ফলে প্রিডায়াবেটিস ধরা পড়লে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতনতার মাত্রা বাড়ানো যায়।
প্রিডায়াবেটিস দমনে করণীয়: প্রিডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার মানে এটা নয় যে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হবে। বরং এই অবস্থায় অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের দিকে টেনে নিয়ে যায়। সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাপনের মাধ্যমে প্রিডায়াবেটিসকে রিভার্স করা যায়, অর্থাৎ আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা যায়।
প্রিডায়াবেটিস থেকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জীবনযাপনে যেসব পরিবর্তন আনতে হবে তা হলো-
ডায়েট থেকে সাদা পাউরুটির মতো সরল কার্বোহাইড্রেট কমাতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা বেশি করে শাকসবজি, গোটা শস্য ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিন খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) প্রতিসপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হালকা প্রকৃতির শরীরচর্চা করতে পরামর্শ দিয়েছে, যেমন- দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানো।
প্রিডায়াবেটিস থাকলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা। সিডিসির মতে, শরীরের ওজন ৫-৭ শতাংশ কমাতে পারলেও বড় প্রভাব পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডায়াবেটিস প্রিভেনশন প্রোগ্রামের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধুমাত্র মেটফরমিন ব্যবহারে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩১ শতাংশ কমে যায়। অন্যদিকে শুধুমাত্র জীবনযাপনে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবর্তন এনে এই ঝুঁকি ৫৮ শতাংশ কমানো যায়।
প্রিডায়াবেটিস শনাক্তের উপায়: সিডিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রিডায়াবেটিস ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে কিছু টেস্ট রয়েছে, যেমন-
এ১সি টেস্ট: এই টেস্টে তিন মাসের গড় রক্ত শর্করার মাত্রা পরিমাপ করা হয়। কারো এ১সি ৫.৭ থেকে ৬.৪ এর মধ্যে থাকলে তার প্রিডায়াবেটিস রয়েছে।
ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্ট: এই টেস্টে খাবার খাওয়ার ৮ ঘণ্টা পর রক্ত শর্করা পরিমাপ করা হয়। টেস্টটি করতে সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল। রক্ত শর্করার মাত্রা ১০০ থেকে ১২৫ এমজি/ডিএলের মধ্যে থাকলে প্রিডায়াবেটিস রয়েছে।
গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট: এই টেস্টে সারারাত উপবাসের পর চিনিযুক্ত পানীয় পানের আগে ও পরে রক্ত শর্করার মাত্রা মেপে দেখা হয়। দুই ঘণ্টা পর রক্ত শর্করার মাত্রা ১৪০ থেকে ১৯৯ এমজি/ডিএলের মধ্যে থাকলে প্রিডায়াবেটিস নির্দেশ করে।