ঘরেই তৈরি করুন ত্বকের দাওয়াই
ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৫ জানুয়ারি): শীত মানেই ত্বকের জন্য দু:সংবাদ। বছরের এই সময়টায় ত্বকের সাথে যেন মান অভিমানের পর্বটা একটু বেশিই চলে । এরমাঝে করোনার কারনে পার্লারে যাওয়াও হয়েছে সীমিত। কিন্তু ত্বকের যত্নের কথাও তো ভাবতে হবে। তাই এই সময়টায় ত্বকের মান ভাঙ্গিয়ে আবার হাসিখুশি ত্বক পেতে নিজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন কিছু ঘরোয়া ফেসিয়াল মাস্ক। ঘরে থাকা উপাদান দিয়েই তৈরি করতে পারেন মাস্কগুলো। এতে বাঁচবে সময় ও অর্থ দুটোই।
ঘরে তৈরি করা যাবে এমন কিছু ফেসিয়াল মাস্ক:
কলার ফেসিয়াল প্যাক
ত্বকের জন্য ভিষন উপকারি সব উপাদান আছে কলায়। এতে থাকা ভিটামিন এ মুখের কালো দাগ দূর করে এবং ও রুক্ষ ত্বককে মসৃন করে। ভিটামিন বি শুষ্কতা দূর করে। ভিটামিন ই রিঙ্কেল দূর করে। পটাসিয়াম ত্বককে মশ্চারাইজড করে এবং ত্বকে আদ্রতা বাড়ায়। তাই উপকারি এই ফলটি ব্যবহার করে সহজেই তৈরি করতে পারেন ঘরোয়া ফেসিয়াল মাস্ক যা আপনার ত্বকে আদ্রতা ফিরিয়ে ত্বককে কোমল রাখতে সাহায্য করবে।
ফেসপেক তৈরির জন্য মাঝারি আকারের পাকা কলা চটকে নিতে হবে এবং মসৃণ পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর তা মুখে লাগিয়ে দশ থেকে বিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অথবা ১/৪ কাপ দইয়ের সাথে ২ টেবিল চামচ মধু এবং একটি মাঝারি আকারের কলা নিয়েও ভিন্ন আরেকটি ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন।
ত্বকের যত্নে ভিনেগার
ত্বকের টোনার হিসেবে প্রাচীন কাল থেকেই ভিনেগার ব্যবহ্রত হয়ে আসছে। মুখ ধোয়ার পর কেবল পানিতে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। এটি আপনার ত্বকের টোনার হিসেবে কাজ করবে। এর জন্য দুই কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মেশাতে হবে এবং মুখ ধোয়ার পর সর্বশেষ পানি হিসেবে এই মিশ্রনটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বককে টানটান রাখতে সাহার্য করবে।
টোনার ছাড়া মাস্ক হিসেবেও ব্যবহার করা যায় ভিনেগার।
মাস্ক তৈরির জন্য ১/৪ কাপ সিডার ভিনেগারের সাথে ১/৪ কাপ পানি মেশান। আলতোভাবে মুখে মিশ্রনটি লাগিয়ে শুকোতে দিন। কিছুক্ষণ পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দুধ দিয়ে ফেসিয়াল মাস্ক
শুধু দুধের মিশ্রন দিয়ে সহজে একটি মাস্ক তৈরি করতে পারেন।
১/৪ কাপ গুঁড়া দধের সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। সেটি পুরো মুখ লাগাতে হবে। শুকোতে দিতে হবে। পরে উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হবে। এটি ত্বকে সতেজ ভাব নিয়ে আসতে সাহায্য করে।
ওটমিলের ফেসিয়াল মাস্ক
দ্রুত ত্বককে চাঙ্গা করার জন্য ওটমিল একটি ভাল উপাদান। আধা কাপ গরম তবে ফোটানো নয় এমন পানির সাথে ১/৩ কাপ ওটমিল মেশান এবং দুই থেকে তিন মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর এর সাথে ২ টেবিল চামচ দই, ২ টেবিল চামচ মধু এবং একটি ছোট ডিম মেশান। মুখে পাতলা আবরণে মিশ্রনটি লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর উষ্ঞ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
লেবুর ফেসিয়াল মাস্ক
লেবুতে দুই ধরণের হাইড্রোক্সি এসিড আছে যেটা মৃত কোষ দূর করতে এবং ব্ল্যাকহেডস এবং একনির মত সমস্যা দূর করতে সাহার্য করে। ঘরে লেবুর মাস্ক তৈরির জন্য একটি লেবুর রসের সাথে ১/৪ কাপ অলিভ ওয়েল মেশাতে হবে। অথবা অর্ধেক লেবুর রসের সাথে এক টেবিল চামচ মধু যোগ করতে পারেন। মুখে ১৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। এবং উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের ফেসিয়াল প্যাক
প্রায় সবসময়ই ডিম ঘরে থাকে। তাই সহজলভ্য এই উপকরণটি দিয় সহজেই ফেসিয়াল প্যাক তৈরি করে ফেলতে পারেন। এরজন্য ডিম বা ডিমের অংশ ভালোভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। মুখে লাগিয়ে আধা ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
ডিমের সাথে এর সাথে সামান্য লেবুর রস অথবা মধু যোগ করে প্যাকটি তৈরি করতে পারেন। যাদের ত্বক রুক্ষ তারা ডিমের কুসুম ব্যবহার করবেন আর যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ডিমের সাদা অংশ নিবেন। যাদের ত্বক স্বাভাবিক তারা ডিমের পুরো অংশই ব্যবহার করতে পারবেন। এটা আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে।
স্ট্রবেরি-দইয়ের মাস্ক:
মুখে তাজা ভাব আনার জন্য এই মাস্কটি উপকারি। এটি তৈরির জন্য ৩ টেবিল চামচ পাকা স্ট্রব্যারির কাথের সাথে ২ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর সেটি মুখে লাগিয়ে ভালভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মিশ্রণের অবশিষ্ট অংশ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারবেন। ত্বকের অবস্থা আগের চেয়ে ভাল হয়েছে বলে অনুভূত হলে এটি প্রতিদিন ব্যবহার না করাটাই ভাল।
মধুর ফেসিয়াল মাস্ক
মধু বরাবরই ত্বকের জন্য দারুণ উপকারি এক উপাদান। মধু দিয়ে সহজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন কিছু ঘরোয়া ফেসিয়াল মাস্ক।
২/৩ কাপ ওটস নিয়ে ১/২ কাপ গরম পানিতে প্রায় পাঁচ মিনিটের মত রেখে গরম করে নিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত মিশ্রণটি ঘন না হচ্ছে। ততক্ষনে অর্ধেকটি আপেল নিয়ে দুই টেবিল চামচ দই, দুই টেবিল চামচ মধু এবং একটি ডিমের সাদা অংশের সাথে ব্ল্যান্ড করতে হবে। এরপর এতে গরম ওটসের মিশ্রনটি মিশিয়ে আবার ভালোমতো ব্ল্যান্ড করতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিটের মত রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।