বিমান বাহিনীতে যুক্ত হবে আধুনিক যুদ্ধ বিমান: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা (২০ ডিসেম্বর): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে আরও আধুনিক যুদ্ধবিমান কেনা হবে। রোববার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি, যশোরে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ২০২০ (শীতকালীন) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। খবর বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিমান বাহিনীকে উন্নত ও আধুনিকায়নে ভবিষ্যতে আরও আধুনিক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিমান বাহিনীতে শিগগিরই যুক্ত হবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকেল সিস্টেম, মোবাইল গ্যাপ ফিলার র‌্যাডার এবং সর্বাধুনিক এয়ার ডিফেন্স রাডার।’

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার বিমান বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় আধুনিক উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং মুখ্য যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যাধুনিক পাঁচটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান কেনার চুক্তি হয়েছে, এর তিনটি বিমান ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। বৈমানিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতে আরও ৭টি অত্যাধুনিক কে-৮ডব্লিউ জেট ট্রেইনার বিমান সংযোজন করা হয়েছে এবং অচিরেই যুক্ত হচ্ছে পিটি-৬ সিমুলেটর। তিনি বলেন, এখন হয়তো কোভিড-১৯ এর কারণে আমরা বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারছি না। তবে, বিমান বাহিনীকে আরও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।

লালমনিরহাটে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিশ^বিদ্যালয়ে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ, গবেষণা, মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চা হবে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি এর মাধ্যমে একদিন হয়তো বাংলাদেশে যুদ্ধ বিমান, পরিবহন বিমান এবং হেলিকপ্টারও তৈরি করতে সক্ষম হবে, ইনশাল্লাহ।’

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনীর মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট উপভোগ করেন। এ সময় তাঁকে মনোজ্ঞ কুচকওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ৭৭তম বাফা কোর্স এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০২০ কোর্স সম্পন্নকারীদের মাঝে ফ্লাইং ব্যাজ, ট্রফি এবং অন্যান্য পুরস্কার বিতরণ করেন। স্কোয়াড্রন জুনিয়র অফিসার শাকিল আহমেদ শ্রেষ্ঠ চৌকষ ক্যাডেট হিসেবে অনুষ্ঠানে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।

পাসিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, দেশের মানুষের কল্যাণ করা এবং সার্বিক উন্নতি করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কাজেই আমাদের বিমান বাহিনীর প্রতিটি সদস্য এবং বিশেষ করে নবীন ক্যাডেট যারা, তাদের সবাইকে আমি বলবো- আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী একটি দেশ ও জাতি। সে কথা মনে রেখেই বুকে সাহস নিয়ে মাথা উঁচু করে বিশে^র দরবারে চলতে হবে। আর নিজেদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে।’

অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ এবং ফ্লাইপাষ্টের জন্য তিনি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে কুচকাওয়াজে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির প্রশংসা করেন।