২০২০ সালে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে, বেড়েছে নারী নির্যাতন: আসক
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ফাইল ছবি
ঢাকা (২ জানয়ারি): মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলেছে, করোনার মধ্যে বিদায়ী বছরে দেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে। তবে বেড়েছে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও সীমান্ত হত্যা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার কারনে মত প্রকাশের অধিকারও খর্ব হয়েছে। ২০২০ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার আসক ২০২০ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে তৈরী করা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারি আবু আহমেদ ফয়জুল কবির ও সহকারী সমন্বয়কারি অনির্বাণ সাহা।
প্রতিবেদনে আসক বলেছে, বিদায়ী বছরে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১,৬২৭ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৩জন। যৌন হয়রানি ও উত্যক্তের শিকার হয়েছেন ২০১ জন। আর এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুন হয়েছেন ১৪ জন। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৫৪ জন নারী।
২০২০ সালে সীমান্তে গুলিতে ৪২ জন এবং শারিরীক নির্যাতনে ৭জনসহ ৪৯ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২০ সালে ১৩০ মামলায় আসামী করা হয়েছে ২৭১ জনকে। এতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৪৭ জন সাংবাদিক।
আসক এর তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ সালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ১৮৮ জন। এদের মধ্যে মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছেন ১১২ জন। আর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে (গ্রেপ্তারের পর) নিহত হয়েছেন ১১ জন।
এছাড়া গ্রেপ্তারের আগে বিভিন্ন বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন ৫ জন এবং গুলিতে নিহত হয়েছে ৮ জন। দেশের কারাগারগুলোতে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেছেন ৭৫ জন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরন, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন ৬ জন। এদের মধ্যে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন দুইজন।
এ বিষয়ে আসক এর নির্বাহী কমিটির মহাসচিব নূর খান লিটন দেশে মহামারীর সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আশাকরি নতুন বছরে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আরো সুন্দর হবে এবং উত্তরণ ঘটবে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১০দফা সুপারিশমালা তুলে ধরেন।