যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ ও বর্ণবাদ নিরসনে মনোযোগী হওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
ঢাকা (১৮ জানুয়ারি): তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ ও বর্ণবাদ নিরসনে আরো মনোযোগী হওয়া উচিত। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে সহিংসতা দেখা দিয়েছে, সেখানে পার্লামেন্টে হামলায় কয়েকজন নিহত হয়েছেন, যা আমাদের দেশ কিম্বা আশেপাশের কোনো দেশে কখনো হয়নি। এফবিআই তথ্য দিচ্ছে, তাদের আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ গ্রহণের দিন সারা যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী সহিংসতা ছড়াতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সন্ত্রাসবাদ দমন করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব এবং লক্ষ্য। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ এবং বর্ণবাদ এ দুটির ব্যাপারে তাদের আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
‘বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আল-কায়েদার কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে’ বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক যে বক্তব্য দিয়েছেন, এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আল-কায়েদার কোনো উপস্থিতি নাই। যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অজ্ঞতাবশত যখন এই বক্তব্য রাখেন, সেটি খুবই দুঃখজনক। সরকারের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।’
শনিবারের পৌর নির্বাচন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি ছিল, কোনো কোনো পৌরসভায় ৭০ শতাংশের বেশি এবং সার্বিকভাবে ৬১ শতাংশের বেশি। এমনকি ইভিএম নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা শঙ্কা-আশঙ্কা থাকার পরও ইভিএম ভোটেও উপস্থিতি ছিল ৫৭ শতাংশের বেশি। অতীতের মতো দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়, তবে সার্বিকভাবে ভোটার উপস্থিতি ছিলো ব্যাপক। ভারতে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছিল। সেই তুলনায় আমাদের দেশে এ নির্বাচন অনেক শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে এবং বিএনপি পেয়েছে ১৮ শতাংশ। আপনারা জানেন, প্রথম দফা পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি’র মাত্র ২ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল, এবার ৪জন।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের পর বিএনপি মহাসচিব যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি স্বাভাবিক। প্রথম এবং দ্বিতীয় দু’দফা নির্বাচনেই জনগণ কর্তৃক প্রচন্ডভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তাদের দুর্বলতা ঢাকা আর মুখ রক্ষার জন্য তারা এ বক্তব্য দিচ্ছেন। জনগণ থেকে তারা যে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন এবং উপজেলা-পৌরসভা পর্যায়ে তাদের সংগঠন যে দুর্বল হয়ে গেছে, সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েই তাদের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাবো, তাহলেই বিএনপি লাভবান হবে।’
নির্বাচনে সহিংসতার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন যে সিলেটের একটি পৌরসভায় বিএনপি’র হামলায় আমাদের প্রার্থীর গাড়ি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন। বিএনপি এরকম বহু জায়গায় হামলা চালিয়েছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় নানা ঘটনা ঘটেছে।’
বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইতিপূর্বেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এবং এখনও যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের ব্যাপারেও সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
মির্জা আব্দুল কাদেরকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা আব্দুল কাদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও জামাতের প্রার্থীদের সম্মিলিত ভোটের চেয়ে তিনগুণ ভোট বেশি পেয়েছেন। এজন্য আব্দুল কাদের মির্জা নিশ্চয়ই অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।’