নৌ চলাচল সচল রাখতে ভাঙ্গা-পুনঃনির্মাণ হবে ১৩ সেতু: এলজিআরডি মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সচিবালয়ে পর্যালোচনা সভায় স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। ছবি পিআইডি
ঢাকা (৩১ জানুয়ারি): বাবুবাজার এবং টঙ্গি রেল ব্রিজসহ ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর উপর নির্মিত কম উচ্চতার ব্রিজ পুনঃনির্মাণ অথবা ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
রবিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং মেঘনা নদী দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশে নদ-নদী, খালের উপর ১৩টি ব্রিজ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলেঅ স্বল্প উচ্চতা সম্পন্ন এবং নৌ চলাচলের অনুপোযোগী। নৌ চলাচল ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে এসব ব্রিজের উচ্চতা বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই। তাই নৌ চলাচল ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখতে এইসব ব্রিজ পুনঃনির্মাণ অথবা ভেঙে ফেলে নতুন ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই ১৩টি ব্রিজের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডি'র ৬টি, সড়ক ও সেতু বিভাগের ৬টি এবং রেলওয়ে মন্ত্রনালয়ের ১টি রয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকার আশপাশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত রাখতে নদী তীরবর্তী যেসকল শিল্প কারখানা রয়েছে সেগুলোকে চিহ্নিত করে ইফ্লোয়েন্ট টিট্রমেন্ট প্লান্ট-ইটিপি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী প্রায় দুই হাজারের বেশি শিল্প-কলকারখানা চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ১৪’শ শিল্প-কল-কারখানায় ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে। যেগুলোতে ইটিপি নেই সেগুলোতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে এবং ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ কওে দেওয়া হয়েছে। শিল্প কলকারখানায় ইটিপি সার্বক্ষণিক সচল রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তর বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করতে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
দখলমুক্ত জায়গা কিভাবে সংরক্ষণ করা হবে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নদ-নদী পাড় অথবা জায়গা দখলমুক্ত করে যেগুলো সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সেগুলো তাদের নিকট হস্তান্তর করবে এবং সিটি কর্পোরেশন এসব জায়গা সংরক্ষণ, সৌন্দর্যবর্ধন নগরায়ন এবং ইকোপার্ক নির্মাণ করবে। উদ্ধারকৃত জায়গা যাতে পুনরায় দখল না হয় সেজন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে।
তিনি বলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনসহ সমন্বিত উদ্যোগে অবৈধভাবে দখলকৃত নদ-নদী, খাল-জলাশয়সহ সরকারি স্থাপনা দখলমুক্ত করা হচ্ছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে।
বিভিন্ন প্রকল্পের সময়সীমা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেকোন প্রকল্প নেওয়া হোক না কেন দীর্ঘদিন ধরে সময় অতিবাহিত করা যাবে না। প্রকল্প নিতেই যদি বছরের পর বছর চলে গেলে বাস্তবায়ন গেলে বাস্তবায়ন হবে কখন এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যে প্রকল্প নেওয়া হোক তা স্বল্প সময়ে শেষ করতে হবে।
এর আগে সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, বালু নদীতে নৌ চলাচল, নদীর তীরে নগরায়ন এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুব শ্রীঘ্রই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
সভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।