ভ্যাকসিন ছাড়া করোনা ভাইরাস নির্মূল দূরূহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
বিশ্ব এনটিডি দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: পিআইডি
ঢাকা (০২ ফেব্রুয়ারি): স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা ছাড়া করোনা ভাইরাস দেশ থেকে একেবারে নির্মূল করা দূরূহ কাজ।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অ্যাসেন্ড বাংলাদেশ আয়োজিত “বিশ্ব এনটিডি দিবস উদযাপন” উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলেই এর আগে পৃথিবী থেকে পোলিও, প্লেগসহ অন্যান্য মহামারীগুলি বিদায় নিয়েছে। অথচ ভ্যাকসিন প্রয়োগে দেশে এখন কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই বিভ্রান্তির ফলে শুরুতে মানুষের মনে ভয়ের শংকা থাকলেও এখন ধীরে ধীরে তা কেটে যাচ্ছে। কারণ, ভ্যাকসিনের প্রথম ২ দিন প্রয়োগের ফলে দেখা যাচ্ছে, এখনো ভ্যাকসিন গ্রহণকারী কারো শরীরে তেমন কোন পাশর্^ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
জাহিদ মালেক বলেন, সরকার আগে থেকেই বলেছে এই ভ্যাকসিন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। তবে, ব্যাপক মানুষের শরীরে প্রয়োগের পরে দুই একজনের দেহে সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতেও পারে। কারণ, পৃথিবীর সকল ভ্যাকসিনই এরকম স্বল্পমাত্রায় মৃদু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে, কোন ভাবেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা থেকে মানুষকে বিরত থাকতে উৎসাহ দেয়া যাবে না। এতে করোনা ভাইরাস থেকে দেশকে মুক্ত করতে আরো বেশি সময় লাগবে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আরো বলেন, “বিশ্বে বর্তমানে ১৭০ কোটি মানুষ এনটিডি (নেগলেকটেড ট্রপিক্যাল ডিজেজ) তে আক্রান্ত। বর্তমানে বিশ্ব ২০টি রোগকে এনটিডি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৩টি রোগকে দেশ থেকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে। অবশিষ্ট ৭টির মধ্যে জলাতঙ্ক, কালাজ¦র, কুষ্টরোগ, দেশ থেকে বিদায়ের পথে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দেশে বর্তমানে সর্প দংশনে বছরে প্রায় ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং বছরে প্রায় ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। একে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। অধিক আক্রান্ত স্থানে বেশি করে অ্যান্টিভেনম প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, ২০২৩ সালের মধ্যেই বাকি রোগগুলি থেকেও দেশ মুক্ত হতে সক্ষম হবে।”
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রামন রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমূল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেনাল, স্বাচিপ-এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বারদান জং রানাসহ অনেকেই।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনসিডিসি-এর লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ রোবেদ আমিন।