সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
মহাখালীর গ্যাস্ট্রালিভার হাসপাতালে করোনার টিকা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: বিজনেসইনসাইডারবিডি
ঢাকা (০৭ ফেব্রুয়ারি): সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনলাইনে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে সারাদেশের এক হাজার ৫টি কেন্দ্রে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মহাখালীর গ্যাস্ট্রালিভার হাসপাতালে করোনার টিকা নেন।
শনিবার বা আজ যারা মোবাইল নম্বরে টিকা নেওয়ার এসএমএস পেয়েছেন তারাই আজ টিকা নিচ্ছেন। আজ যারা টিকা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যাই বেশি। সেই সঙ্গে কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, তালকাভুক্ত মনোনীত সন্মুখ সারির ব্যক্তি ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কিছু ব্যক্তি আজ এ টিকা নিচ্ছেন।
জানা গেছে শনিবার পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় চার লাখ মানুষ টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
রাজধানীর যেসব কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে করোনার টিকা: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, আজ ঢাকায় ৫০টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২১ ও দক্ষিণে ২৯ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে ২০৬টি টিম কাজ করছে।
রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, মহাখালীতে সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।
এছাড়া ডিএনসিসির মগবাজারের নয়াটোলা মাতৃসদন কেন্দ্র, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা মাতৃসদন কেন্দ্র ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদনে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো- সচিবালয় ক্লিনিক, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, লালবাগে ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
এ ছাড়া বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, ধলপুরে নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্রে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
আর ঢাকার বাইরে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৯ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জায়গায় ২ হাজার ১৯৬টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুজন স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রতিটি দলে চারজন সদস্য থাকবেন।
দেশে প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২৭ জানুয়ারি, উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিনে টিকা নেন ২৬ জন। দেশে প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। পরদিন রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ পাঁচ শতাধিক কর্মীকে টিকা দেওয়া হয়।