হাইজিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত অবমুক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: জাতীয় বীজ বোর্ডেও ১০৪তম সভায় হাইজিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত অবমুক্ত করা হয়েছে
ঢাকা(০৯ ফেব্রুয়ারি) : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত হাইজিংক সমৃদ্ধ ‘ব্রিধান ১০০’ জাত অবমুক্ত করেছে জাতীয় বীজ বোর্ড। একইসঙ্গে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত লবণাক্ততাসহিষ্ণু দেশী পাটের (বিজেআরআই দেশী পাট-১০) জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এই জাতটির শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার বিকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডেও ১০৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডেও সভাপতি মো: মেসবাহুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এসময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বিএডিসির চেয়ারম্যন মো: সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর, বিজেআরআইর মহাপরিচালক ড. আশম আনোয়ারুল হকসহ অন্যান্য সংস্থাপ্রধান ও বীজ বোর্ডেও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ব্রি উদ্ভাবিত শততম জাতের (ব্রি ধান ১০০) অবমুক্তকরণ এটি। ব্রির তথ্যে জানা যায়, ‘ব্রিধান ১০০’ হাইজিংক সমৃদ্ধ। জিংকের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ২৫ দশমিক ৭০ মিলিগ্রাম। দেশের ১০টি স্থানে ট্রায়াল করে গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে। জাতটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। বোরো মৌসুমে চাষের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
জাতীয় বীজ বোর্ডেও সভাপতি মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেন, মুজিব শতবর্ষে উচ্চজিংক সমৃদ্ধ ‘ব্রিধান ১০০’ অবমুক্ত করতে পারা খুবই আনন্দের। আশা করা যায়, এটি একটি মেগা ভ্যারাইটি হবে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির অধিকাংশ ক্যালরি, প্রোটিন ও মিনারেল আসে ভাত থেকে। ভাত তাদের কাছে সহজলভ্য। জিংকসমৃদ্ধ এ জাতটি উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জিংকের চাহিদা অনেকটাই পূরণ হবে।
ব্রির মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর বলেন,ব্রি ধান ১০০ মুজিব শতবর্ষে ব্রির শততম জাত হিসেবে অবমুক্ত হওয়ায় একটি বিশেষত্ব পাবে। এ জাত উচ্চমাত্রার জিংক সমৃদ্ধ। ফলন ব্রি ধান ২৯ থেকে বেশি এবং জীবনকাল ব্রিধান ২৮ এর মত, যা আমাদের দীর্ঘদিনের আকাংখার প্রতিফলন। আমাদের পরিকল্পনা অতিদ্রুত এ জাতটি কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে একদিকে উৎপাদন বৃদ্ধি ও অন্যদিকে পুষ্টির যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।
সভায় বীজ ডিলার নিবন্ধন ও নবায়নের ক্ষেত্রে ‘সেবা সহজীকরণ’ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন থেকে বীজ ডিলারদের নিবন্ধন এক বছরের পরিবর্তে একসঙ্গে ৫ বছরের জন্য দেয়া হবে। এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেন, সেবা সহজীকরণের ফলে ডিলারদের প্রতিবছর নবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না। বীজ ডিলারদের হয়রানি অনেক কমে আসবে।
এখানে উল্লেখ্য, বিজেআরআই দেশী পাট-১০ জাতটি স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যম মাত্রার লবণাক্ততা সহিষ্ণু। এটি দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় বপন উপযোগী। আরেকটি বৈশিষ্ট হলো গাছের বয়স ১০৫-১১৫ দিন হলেই কেটে রোপা আমন ধান লাগানো যায়। এবং আমন কেটে রবি ফসল চাষ করা যায়। খুলনা ও বরিশালে ৫ টি ট্রায়ালে হেক্টর প্রতি আঁশের ফলন ২ দশমিক ৫৭ টন ও পাট কাঠির ফলন ৭ দশমিক ২১ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।
এছাড়া, আগামী মৌসুমের জন্য পাটবীজ আমদানির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বোর্ড। ২০২১-২২ উৎপাদন বর্ষে পাটবীজের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন।