স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের ব্যয় ৪৬ কোটি টাকার বেশি
বিশেষ প্রতিবেদন || বিজনেস ইনসাইডার
গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বিডি
ঢাকা (১৮ ফেব্রুয়ারি): বর্ণাঢ্য আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার দুটি কোম্পানীর সহযোগিতা নিচ্ছে সরকার। কোম্পানী দুটির একটি হচ্ছে আমেরিকার ইন্টেল এবং অন্যটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার রিমার্কেবল মিডিয়া। আগামি ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে শেষ হবে। আর এতে ব্যয় হবে প্রায় ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি পালনের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে একটি সার-সংক্ষেপ পাঠিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
মুুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ প্রসঙ্গে বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে বলেন, আমরা ড্রোন শো, এরিয়াল শো করবো। এগুলো কোন বিদেশী কোম্পানীর সহযোগিতা ছাড়া করনা সম্ভব নয়। এগুলো করার জন্য আমরা একটি কোম্পানীকেই পেয়েছি। যারা ইতিমধ্যে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ২টি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে।
তিনি জানান, দেশে এই ধরণের অনুষ্ঠান এটা প্রথম হবে।
মন্ত্রিসভা কমিটির জন্য পাঠানো সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট হলো ড্রোন শো, লাইট এন্ড লেজার প্রোজেকশন শো। এই ধরনের ইভেন্ট বাংলাদেশে এই প্রথম। এতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। ৭’শ থেকে ৮’শ ড্রোন আকাশে ৪’শ থেকে সাড়ে ৪’শ ফুট উপরে উঠে ৩০ মিনিটের বিভিন্ন শো উপস্থাপন করবে।
এছাড়া লেজার শোর মধ্যে অন্যতম হলো এরিয়াল লেজার প্রজেকশন শো। দুটি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এক হাজার ফুট উপরে তিন হাজার বর্গফুট জুড়ে লেজার প্রজেকশন শো প্রর্দশিত হবে। সেখানে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণসহ বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও উন্নয়নের চিত্র প্রদর্শন করা হবে। অনুষ্ঠানটি জাতীয় সংসদ প্লাজা বা হাতিরঝিলে হলে শহরের লাখ লাখ লোক দেখতে পারবে। এরিয়াল শো টি ঢাকা শহরের সকল প্রান্তে আর্বতিত হয়ে বিচরণ করবে। এছাড়া এই দুটি শোর মাধ্যমে বাংলাদেশ গিনেজ রেকর্ডস বুকে স্থান করে নেওয়ার একটি বিরল সুযোগ পেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
সার-সংক্ষেপে আরো উল্লেখ করা হয়, এই শো আয়োজন করতে ইনসেপশন ৩৬০ লিমিটেড থেকে একটি প্রস্তাবণা পাওয়া যায়। এই অনুষ্ঠান আয়োকজনে সক্ষম এ ধরণের অন্য কোন প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। ড্রোন ও এরিয়াল লেজার শো কোন বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা ইতিমধ্যে আমেরিকার ইন্টেল ও অস্ট্রেরিয়ার রিমার্কেবল মিডিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বিদেশী এই কোম্পানী সারা বিশ্বে এই ধরণের প্রোগ্রাম করে থাকে।
এই অনুষ্ঠান আযোজনে ইনসেপশন ৩৬০ লিমিটেডের দেয়া প্রস্তাব অনুযায়ী , বিদেশী ক্রুদের জন্য এয়ার টিকেট ও হোটেলে থাকা বাবদ খরচ হবে ৬৫ লাখ টাকা, ড্রোন শোর জন্য ব্যয় হবে ১৮ কোটি টাকা। এরিয়াল লেজার শোর জন্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা, ফায়ারওর্য়াকস শোতে দেড় কোটি টাকা, স্থানীয় লজিস্টিক, ম্যানপাওয়ার ইত্যাদি ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, এ/ডি প্রোডাকশন খরচ এক কোটি টাকা, এলইডি, লাইটিং খরচ ৪২ লাখ টাকা ও ব্র্যান্ডিং ও প্রোমোশনে ব্যয় হবে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। এছাড়া স্থানীয় এজেন্সীর সার্ভিস ফি ধরা হয়েছে তিন কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর এই খরচের ওপর ভ্যাট ও এ আইটি বাবদ ৭ কোটি ৫২ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ টাকা ব্যয় হবে। সব খরচ ধরে এই অনুষ্ঠানে মোট ব্যয় হবে ৪৬ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৫০ টাকা।
এই অনুষ্ঠানের জন্য সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত বাজেট থেকে ১০ কোটি টাকা এবং বাকী টাকা বিভিন্ন স্পন্সরের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে বলে সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়।