আন্দোলনে উত্তপ্ত চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার
চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। ফোগ্রাফ: বিজনেসইনসাইডারবিডি
ঢাকা (২২ ফেব্রুয়ারি): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীরা হলে ঢুকে পরার পর এবার হল খুলে দেয়ার দাবির আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা হল খুলে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলে শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুরে গেটের শিকল খুলে ভেতরে ঢুকে পরেন। একজন শিক্ষার্থী হল থেকে জিনিসপত্র আনার কথা বললে ঢোকার পর তার সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঢোকেন। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা কোন বাধা দেননি। শিক্ষার্থীরা এসময় সব হল খুলে দেয়ার দাবিতে শ্লোগানও দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পর হল থেকে বেড়িয়ে গেছেন। বিকেলে তারা হল খোলার দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হলে উঠতে চাই। তাই দ্রুত হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিকেলে মানববন্ধন করবো। এ দাবিতে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাব। তিনি বলেন, হলের কেয়ারটকোর আমাকে বলেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। প্রত্যেক দিনই তারা চার পাঁচজন করে আসে। তবে আজ অনেকে একসঙ্গে এসেছে। ছবি তুলেছে। তারা এখন হল থেকে বেরিয়ে গেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সিনেটে হল প্রভোস্টদের জরুরি বৈঠক চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, সোমবার সকাল দশটার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে হলে অবস্থান করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে না যাওয়ায় বিষয়টি তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিম ও হল প্রশাসন বিভিন্ন হলে যান। প্রভোস্টসহ হল প্রশাসন রুমে রুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তারা বলছেন, তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। গেরুয়া তাদের জন্য নিরাপদ নয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টেও আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার অনুরোধ করেছে। কিন্তু তারা হল ছাড়তে রাজি হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
হল খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও। রবিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে আবাসিক হলে খুলে দিতে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার তারা বলেছেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে হল ও ক্যাম্পাস খুলে না দিলে ১ মার্চ তারা নিজেরাই তালা ভেঙ্গে হলে ঢুকবেন। বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সময় প্রক্টর শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিলেও তারা সেটা মানেননি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রনালয়, ইউজিসি এবং ভিসিদের সভা রয়েছে। আমরা ওই সভার দিকে চেয়ে আছি। আমরা চাই ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হল এবং ক্যাম্পাস খোলা হোক। নইলে ১ মার্চ আমরা নিজেরাই তালা ভেঙ্গে হলের উঠব।
শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সরকারের নির্দেশনা পেলেই হল ও ক্যাম্পাস খোলা হবে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীরা স্বোচ্চার হয়ে উঠছেন। সোমবার এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল করেছেন।