সব উপজেলায় ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা (১১ মার্চ): জন্মান্ধতা দূর করাসহ জনগণের কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে সব চেষ্টাই সরকার করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলাতে ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ স্থাপন করবে। বৃহস্পতিবার ২০ জেলার ৭০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ উদ্বোধন করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তিনি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে এবং মানুষ সেবা পাবে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। কারণ বাংলাদেশকে যদি আমরা সুস্থভাবে গড়তে চাই, তাহলে আমাদের সুস্থ মানুষও দরকার।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আসলে চক্ষু চিকিৎসার অনেক খরচ। সাধারণ মানুষ এই খরচটা দিতে পারে না। কিন্তু তারা এদেশের নাগরিক, তারা চিকিৎসা পাবেন না? আমি তো শুধু প্রধানমন্ত্রী না, আমি তো জাতির পিতার কন্যা। সেই হিসেবে আমি মনে করি এটা আমার দায়িত্ব। এবং সেই দায়িত্বই আমরা পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্ধজনকে আলো দান- এর থেকে বড় কাজ আর কিছু হতে পারে না। “কাজেই আমরা সেই চিন্তা থেকেই এ পদক্ষেপ নিয়েছি। সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই যে এই সুযোগটা সৃষ্টি করা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেকে ঠিকমত চক্ষু সেবাটা নিতে পারে না। অনেক সময় বুঝতে পারে না কী হল, বা অন্ধত্ব তাদের জীবনটাকে একেবারে অর্থহীন করে দেয়। কিন্তু এই সেবার মধ্য দিয়ে আমি মনে করি যে তাদের এই চিকিৎসা সেবাটা পেলে তাদের জীবনটা অর্থবহ হবে, সুস্থ হতে পারবেন। সেজন্যই আজকে আমাদের এই উদ্যোগ।”
সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলায় চিকিৎসা সেবা পাওয়াও যে সহজ হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সবাইকে কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা নিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না। বরং নিজের জায়গায় বসে বা কমিউনিটি ক্লিনিকে বসে চিকিৎসাটা পেতে পারেন। অর্থাৎ টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাটা, সেটা কিন্তু করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আজকে চিকিৎসা পাওয়াটা অনেক সহজ হয়েছে।”
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “টিকা দেওয়ার সময় আমি একটা কথা বলব, প্রত্যেকের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেন্টারে যাবেন, রেজিস্ট্রেশন করবেন। করে আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে যখন আপনার সময় আসবে, ডাকবে তখন দেবেন। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা কিন্তু কখনো করবেন না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। এখন আমরা উন্নয়নশীল দেশ। জাতির পিতা যে দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটা ধাপ উপরে চলে এসেছি। বাংলাদেশ আর কারো কাছে ভিক্ষার জন্য হাত পাতবে না। বাংলাদেশ এখন মাথা উঁচু করে চলতে পারবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা নিয়ে আমরা চলতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জর নাচোল উপজেলা, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কর্মকর্তা এবং উপকারভোগীদের কথা শোনেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।