শেষ শ্রদ্ধায় মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ব্যারিস্টার মওদুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ (ফাইল ছবি)
ঢাকা (১৯ মার্চ): কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, হাইকোর্ট ও নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শুক্রবার প্রথমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়।
সকাল ৯টার দিকে মওদুদ আহমদের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। মরদেহ শহীদ মিনারে আসার আগে থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ সেখানে অবস্থান করছিলেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত মরহুমের মরদেহ রাখা হয় সেখানে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দল ও সংগঠন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মওদুদ আহমদের মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর দীর্ঘ দিনের কর্মস্থল সুপ্রিম কোর্টে প্রাঙ্গণে।
সুপ্রিম কোর্টে মওদুদের জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম), এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, ফজলুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুছ তালুকদার দুলু, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ ছাড়া জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপির মহাসচিব মনজুর হোসেন ঈসা, জাগপা মহাসচিব ইকবাল হোসেনসহ তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী আইনজীবীরা জানাজায় অংশ নেন।
সেখানে জানাজা শেষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয় মওদুদ আহমদের মরদেহ। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় জানাজা। সেখানে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। প্রিয় নেতার জানাজা ও তাকে শেষ বিদায় জানানোর জন্য সকাল থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে ভিড় করেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা অধীর অপেক্ষায় ছিলেন কখন সেখানে মওদুদের কফিন নেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টে জানাজা শেষে মওদুদের লাশ নয়াপল্টনে নেওয়া হয়ে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মওদুদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা এদিন আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। অনেকেই এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এখানে মওদুদের জানাজায় অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মওদুদ আহমদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনের সহযোদ্ধারা।
নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জানাজা শেষে বেলা ১১টায় মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নেওয়া হয় নোয়াখালীতে।
বসুরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাঠে বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মওদুদ আহমদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।