শাল্লার ঘটনায় ১০ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বিডি
ঢাকা (২০ মার্চ): সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১০ বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে জঙ্গি সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য দেশের সুনাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার (২০ মার্চ) গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন নাট্যব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। অন্যান্য বিবৃতিদাতারা হলেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, শামসুজ্জামান খান, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীর এবং আবদুস সেলিম।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যখন সারা দেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ পালিত হচ্ছে, তখন শাল্লায় যে অমানবিক সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে তা আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা আমাদের বিস্মিত করেছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মারফত জানা গেছে হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হকের উসকানিতে ও হেফাজতের অনুসারীরা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে এই বীভৎস সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হয়। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে জেনেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা অবিলম্বে উসকানিদাতা মোমিনুল হক ও শাল্লার নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণকারী ও অগ্নিসংযোগকারী-লুণ্ঠনকারী সকল দাঙ্গাবাজদেও গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মহলের প্রশ্রয়ে সাম্প্রদায়িক হেফাজত- জামায়াতিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ঘটনা সাহস পাচ্ছে। পাশাপাশি এই সাম্প্রদায়িক শক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের অনেক প্রগতিশীল ব্যক্তিদের নামে কুৎসা রটনা করছে অথচ বিআরটিসি এই কুৎসা রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এই দন্ডযোগ্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিআরটিসির যথাযত তৎপরতা প্রত্যাশা করি।
দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের আশঙ্কা করে বিবৃতি বলা হয়েছে, আমাদের আশঙ্কা শেখ হাসিনা দেশকে যে লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং বিশ্বব্যপী বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন, শাল্লাজাতীয় সাম্প্রদায়িক ঘটনা সেই ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করবে এবং একটি নেতিবাচক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রতীয়মান হবে। অতীতে আমরা দেখেছি যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচারকার্য এখনো সম্পন্ন হয়নি। আমদের আশঙ্কা এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে না, পিছিয়ে যাবে এবং এতদিনের সব অর্জন ভুলুণ্ঠিত হবে। এই দাঙ্গাবাজ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থাই নেন তা সরকারের বিবেচনা।
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধেরও ডাক দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের সকল সুনাগরিকদের প্রতি আমাদের আহ্বান- আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে এই জঙ্গি সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধ করি।