বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। গতকাল শনিবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন শেষে তিনি এই নির্দেশনার কথা জানান। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকেরই দেশে আইনের আশ্রয় লাভ ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার আছে। মানুষের সেই অধিকার নিশ্চিত করতে জেলা জজরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজিস্ট্রার মশিউর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মুহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞাসহ বিচারক ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে নগরীর টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জেলা আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধান বিচারপতি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের সঞ্চালনায় সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করতেন। এই অসাম্প্রদায়িক চেতনা আমরা সবাই ধারণ করি। আসুন বাংলাদেশকে আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করি।’
ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সামরিক শাসন একটি অসাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থা। আমরা বিচার বিভাগ সেই অসাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছি। সুপ্রিমকোর্ট পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা আছে, বিচার বিভাগেরও দুর্বলতা আছে। আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে গিয়ে অন্তত ১২ বিচারক বিব্রতবোধ করেছি। এই বিচার বিভাগ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আলবদর, আলশামসদের বিচার করেছে, বিচার এখনও চলমান রয়েছে। স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিষয়টি আমাদের মাথায় থাকতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারবে।’
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একজন আইনজীবীর ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার লড়াই শুধু আদালতে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না, বরং একজন সুনাগরিক হিসেবে সমাজের প্রতিটি মানুষের জন্য ন্যায়বিচারভিত্তিক জীবনমান উপহার দেয়া একজন আইনজীবীর দায়িত্ব। বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে এই ভেবে যে, আমরা সৎ থাকতে পারছি কি না। আমার প্রত্যাশা থাকবে, আপনারা প্রতিনিয়ত নিজেকে আত্মজিজ্ঞাসার সম্মুখীন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘দায়িত্বভার গ্রহণের পর আমি বিচার বিভাগের ডিজিটাইজেশন, বিচার সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণ তথা বিচার বিভাগের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যারা আইনের গবেষণা করতে চান, তাদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খুলেছি। সেখানে আইনজীবী ও বিচারকরা গবেষণার সুযোগ পাবেন।’