যেকোনো মূল্যে হরতাল সফল করা হবে : হেফাজত মহাসচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বায়তুল মোকারমে হেফাজতে বাংলাদেশের প্রতিবাদ সমাবেশ, বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (২৭ মার্চ): আগামীকাল রবিবার সারাদেশে হরতার কর্মসূচি যেকোন মূল্যে সফল করা হবে বলে জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী।
শনিবার দুপুরে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি করে পাঁচজনকে হত্যার প্রতিবাদে রবিবার সারাদেশে হরতালের কর্মসূচি দেয়া হেফাজত।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকাল সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ চলাকালে রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী মসজিদে প্রবেশ করে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। এতে অসংখ্য মুসল্লি হতাহত হয়। এরই প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ধর্মপ্রাণ মুসলামান ও ছাত্রজনতা রাজপথে নেমে এলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগ বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়, এতে হাজাহাজারী মাদ্রাসার চারজন ছাত্র মারা যায়।
তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভকালে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা ও গুলি চালালে সেখানেও একজন নিহত ও অসংখ্য বিক্ষোভকারী আহত হয়। ঢাকার যাত্রাবাড়িতে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা চালায়। এভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে হামলা ও গুলি চালানো হয়। আমরা এসব হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আনন্দঘণ সময় অতিবাহিত হচ্ছে। এই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের লক্ষে আমরা হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দল সংঘাতপূর্ণ যে কোনো কর্মসূচি থেকে বিরত ছিলাম। কিন্তু এই দিনে সরকার তার দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে কলঙ্কিত করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আগে থেকেই সরকারকে সতর্ক করে আসছিলাম যে, নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অতিথি করলে দেশে অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু সরকার জনগণের হৃদয়ের মর্মবাণী বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে যখনই এই মোদির বাংলাদেশে আগমন ঘটে, সাধারণ জনগণ তাদেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে রাজপথে নেমে আসে। রাজপথে ঝরে যায় পাঁচটি তাজা প্রাণ।
বক্তারা বলেন, পাঁচ শহীদের রক্তের বদলা নিতে আগামীকাল রবিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চায়, যদি আমাদের হরতালের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করা হয়, যদি আমাদের কোনো কর্মী হতাহত হয়, যদি কোনো জায়গায় হাটহাজারী-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাহলে আগামী দিনে ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কওে দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিম উদ্দিন প্রমুখ।