Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ ‘মি. বেকার’ এর বিরুদ্ধে ৮০ কোটি টাকার মামলা

শুক্রবার

১৫ নভেম্বর ২০২৪


১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১,

১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ ‘মি. বেকার’ এর বিরুদ্ধে ৮০ কোটি টাকার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ০১:০৫, ৯ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ০২:০৩, ৯ নভেম্বর ২০২০
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ ‘মি. বেকার’ এর বিরুদ্ধে ৮০ কোটি টাকার মামলা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (৮ নভেম্বর): ‘মি. বেকার কেক এন্ড পেস্ট্রি শপ লিমিটেড’ এর বিরুদ্ধে ৮০ কোটি টাকার মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ। ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় রোববার ভ্যাট গোয়েন্দারা এ মামলা করেন।

ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ২০ অক্টোবর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ‘মি. বেকার কেক এন্ড পেস্ট্রি শপ লিমিটেড’ এর ১৬০/৪৮৫, মোকদাম আলী সরকার রোড, ধোউড়, তুরাগে অবস্থিত কারখানা কাম প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন নং: ০০০৯৬৪৬৮২ -০১০২। ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধিত। ‘মি. বেকার’ এর রাজধানীতে ২৯ টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরনের হিসাব সংরক্ষণ না করেই ব্যবসা পরিচালনা করছে।

পরে অনুসন্ধানের স্বার্থে টঙ্গী এলাকায় তাদের নামে খোলা দুটো ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। এতে তাদের ফিনান্সিয়াল প্রতিবেদন পাওয়া যায় এবং এগুলো পর্যালাচনায় তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের চিত্র উঠে আসে। এতে দেখা যায়, ‘মি. বেকার’ ৮০.১৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এর মধ্যে ২৬৫ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করে ৩৪.৬ কোটি টাকার মূসক ফাঁকি দিয়েছে। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার এবং ফেরদৌসী মাহবুব।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আসিফ জামান ১৮ অক্টোবর তার নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডে অবস্থিত ‘মি বেকার’ এর বিক্রয় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভ্যাট চালান না দেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন। তিনি ঐ স্ট্যাটাসে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে প্রতিকার চেয়ে উল্লেখ করেন, ভোক্তারা ভ্যাট দিলেও তা সরকার পাচ্ছে না।

এই অভিযোগ ও আরো গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম অভিযোগটির তদন্ত করার জন্য ভ্যাট গোয়েন্দাকে নির্দেশ দেন।  

ভ্যাট গোয়েন্দা দলের আকষ্মিক পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানটিতে ভ্যাট আইনের বাধ্যবাধকতা অনুসারে ক্রয় হিসাব পুস্তক (মূসক-৬.১) ও বিক্রয় হিসাব পুস্তক (মূসক-৬.২) পাওয়া যায়নি। পরিদর্শনকালে ভ্যাট সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলাদি দেখাতে বলা হলে, উপস্থিত মালিকপক্ষ তা দেখাতে পারেননি এবং এগুলো সংরক্ষণ না করার বিষয়ে তারা কোন সদুত্তরও দিতে পারেননি। প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে মালিকপক্ষ নিজস্ব বাণিজ্যিক দলিলাদিও রাখেন না। এতে ভ্যাট গোয়েন্দা দলের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে মনগড়া ও কাল্পনিক হিসাবের ভিত্তিতে ‘মি. বেকার’ স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে রিটার্ন দাখিল করে আসছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি কেন্দ্রীয় নিবন্ধিত হওয়ায় মূসক-৬.৫ এর মাধ্যমে পণ্য ফ্যাক্টরি থেকে আউটলেটে নেয়ার বিধান থাকলেও তা পরিপালন করা হয় না। একইসাথে, তারা ভোক্তাদের নিকট থেকে সংগ্রহ করা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে যথাযথভাবে জমা দেয়নি। অভিযানে গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে অবস্থিত অন্য একটি ভবনের বিভিন্ন তলায় ও ছাদে অবস্থিত কর্মচারীদের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাদের পুরোনো কিছু অসংগঠিত তথ্যাদি পেয়েছে।

পরবর্তীতে জব্দকৃত এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও দলিলাদির ভিত্তিতে  জুলাই/২০১৪ হতে জুন/২০১৯ পর্যন্ত সময়ে শুধুমাত্র বিক্রয়ের উপর ৩৪,৬০,৫৬,৩৩৯ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ভ্যাটের উপর মাস ভিত্তিক ২% হারে  ২৫,৩৭,৮৭,০৯১ টাকা সুদ প্রযোজ্য।

এছাড়া সেপ্টেম্বর/২০১৯ হতে সেপ্টেম্বর/২০২০ পর্যন্ত সময়ে জব্দকৃত ক্রয়ের চালান পরীক্ষা করে কাঁচামাল ক্রয়ের উপর অপরিশোধিত উৎসে ভ্যাট ১৭,৩৩,৯৬৮ টাকা পাওয়া যায়।  এর উপর মাস ভিত্তিক ২% হারে সুদ ৩৪,৬৭৯ টাকা প্রযোজ্য।  

জুলাই/২০১৪ হতে জুন/২০১৯ পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন শোরুম এর স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর অপরিশোধিত ভ্যাট ১,৫৬,৩৯,০৪০ টাকা যার উপর মাস ভিত্তিক ২% হারে সুদ প্রযোজ্য ৯৮,৪৮,৮১৪ টাকা।

জুলাই/২০১৪ হতে জুন/২০১৯ পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন সেবা ক্রয়ের উপর অপরিশোধিত উৎসে ভ্যাট ১০,২০,৭৫,১৮৩  টাকা যার উপর মাস ভিত্তিক ২% হারে সুদ ৭,২৪,৫৫,১৪১ টাকা প্রযোজ্য।

‘মি. বেকার কেক এন্ড পেস্ট্রি শপ লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় এবং উৎসে কর্তন বাবদ সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাট ৪৬,৫৫,০৪,৫৩১ টাকা উদঘাটন করা হয়। এ অপরিশোধিত মূসকের উপর সুদ বাবদ মোট ৩৩,৬১,২৫,৭২৫ টাকা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট ৮০,১৬,৩০,২৫৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকির সাথে জড়িত।

‘মি বেকার’ এর আরেকটি সুইটমিটের ব্যবসা রয়েছে। রাজধানীতে এর ৫টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এইসব বিক্রয়কেন্দ্রের তথ্যাদিরও অনুসন্ধান চলছে।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়