দোয়া ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা হেফাজতের
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম বক্তব্য রাখছেন, বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা (২৮ মার্চ): হেফাজত ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে গত দুইদিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে আগামিকাল সোমবার সারাদেশে দোয়া কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। এছাড়া আগামি ২ এপ্রিল শুক্রবার সারাদেশে বাদ জুম্মা বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় হরতাল পুরানা পল্টনস্থ খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
নুরুল ইসলাম জানান, হরতালের সমর্থনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাদের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে গুলিবর্ষণ করে। এসময় সারাদেশে হেফাজত ইসলামের ১৭ জন কর্মী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০০ নেতাকর্মীকে।
এসময় তিনি নিহতদেরন স্মরণে আগামিকাল সারাদেশে দোয়া ও ২ এপ্রিল বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
হেফাজত ইসলামের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যারা নিহত হয়েছে, তাদের যারা মেরেছে, তাদের খুঁজে বের করে আইন আওতায় আনতে হবে। বিচার করতে হবে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার দায়িত্বও সরকারকে নিতে হবে। একইসঙ্গে আটককৃত কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরোধীতার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা, কাশ্মিরে মুসলিম নির্যাতন মোদির কারণে হয়েছে। তাই আমরা মোদির আসার বিরোধীতা করেছি।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শতবর্ষী কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে অল্প সময়ের জন্যে বিক্ষোভ করে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিক্ষোভ মিছিল শেষে হবার পরে সবাই মাদ্রাসায় ফিরে যান। তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় সংসদ সদস্য সরকারদলীয় এমপি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে অনেক দূর এসে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার সামনে এসে অবস্থান নিয়েছে এবং ককটেলসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে এগিয়ে আসে এবং আক্রমণকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
মামুনুল হক বলেন, এভাবেই উস্কানি দিয়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি করে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে চারজনকে হত্যা করে এবং হাসপাতালে আরও ৪ জনসহ ৮ জন মারা যায়। হেফাজতের কেন্দ্রীয় মহল থেকে বলা হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করতে। তাই সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবেই হরতাল পালিত হয়েছে। কিন্তু সাইনবোর্ডে শুধু রাস্তা অবরোধ করা হলে রাস্তা থেকে হরতাল সমর্থনকারীদেরকে সরাতে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত শহীদদের জানাজা শেষে বিক্ষোভ মিছিলে বিজিবি গুলি চালায় এবং আজকে আরও ৪ জন মারা যায়। এভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই দিনে ১২ জন, হাটহাজারীতে ৪ জন এবং ঢাকায় ১ জনসহ সারা দেশে মোট ১৭ জনকে হত্যা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।