শেখ হাসিনাকে ভারতে চুপ থাকতে হবে: ড. ইউনূস
নিজস্ব প্রতিবেদক: || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
ভারতে বসে বাংলাদেশ সম্পর্কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতিকে ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’ বলে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে বাংলাদেশ তার প্রত্যর্পণের অনুরোধ না করা পর্যন্ত হাসিনাকে চুপ থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তার প্রত্যর্পণের অনুরোধ না করা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তাহলে শর্ত হবে তাকে (শেখ হাসিনা) নীরব থাকতে হবে।’
ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ড. ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়, তখন নয়াদিল্লিকে অবশ্যই আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের অন্য সব রাজনৈতিক দলকে ইসলামপন্থি হিসেবে আখ্যায়িত করা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে, তা ভাবারও কোনো কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘ভারতে হাসিনা অবস্থান করায় কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কারণ বিচার করার জন্য আমরা তাকে ফেরত আনতে চাই। তিনি (হাসিনা) ভারতে রয়েছেন এবং সেখান থেকেই মাঝে মাঝে তিনি কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা ভুলে যেতাম; মানুষও এটা ভুলে যেত যদি তিনি তার নিজের জগতেই থাকতেন, কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলছেন এবং দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন, কেউই এটা পছন্দ করছে না।’
‘সবাই এটা বুঝতে পেরেছে। আমরা বেশ দৃঢ়ভাবে বলেছি যে তার চুপ থাকা উচিত। তাকে (হাসিনা) সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং তিনি সেখান থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন এটি আমাদের প্রতি একটি ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’। তার মনে রাখতে হবে, তিনি স্বাভাবিক ভাবে সেখানে গেছেন এমন নয়, জনগণের অভ্যুত্থান এবং জনরোষের কারণে তিনি পালিয়ে গেছেন’— যোগ করেছেন ড. ইউনূস।
এসময় গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার দেওয়া এক বিবৃতির কথা উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। ওই বিবৃতিতে হাসিনা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করে বলেছিলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’, হত্যা ও ভাঙচুরের ঘটনা অবশ্যই তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত এবং শাস্তি দিতে হবে।
ভারতের কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হবে কি না জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘হ্যাঁ, তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে, তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না। সে যে ধরনের নৃশংসতা করেছে, তাকে এখানে সবার সামনে বিচার করতে হবে।’
বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার সাম্প্রতিক ঘটনা এবং ভারতের এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের অবস্থাকে এত বড় আকারে চিত্রিত করার চেষ্টা করার বিষয়টি একটি অজুহাত মাত্র।’