উপকূলে দস্যুদের আস্তানা গড়তে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চট্টগ্রাম ব্যুরো || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম (১২ নভেম্বর): স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, উপকূলীয় এলাকায় দস্যুদের আস্তানা গড়তে দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকার উপকূলীয় অঞ্চলের ৩৪ জন জলদস্যুর আত্মসমর্পণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উপকূলে কোনো দস্যুর আস্তানা গড়তে দেওয়া হবে না। আমাদের র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড রয়েছে, প্রয়োজনে বিজিবি রয়েছে। আপনারা পালিয়ে বেড়াতে পারবেন, কিন্তু আস্তানা গড়তে পারবেন না।
দস্যুবাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা আত্মসমর্পণ না করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মুখোমুখি হলে কি পরিস্থিতি হবে, তা আপনারাই জানেন। যে যেখানে আছে, তাদেরকে খুঁজে বের করা হবে। তাই কঠোর পরিণতির আগে আত্মসমর্পণ করে ফেলুন। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা উপকূলে সব দস্যুবাহিনী দমন করবোই।
তিনি বলেন, একসময় উপকূলের লোকজন এসব দস্যুদের কাছে জিম্মি ছিলো। ধার করে হলেও দস্যুদের দাবি করা টাকা পরিশোধ করতে হতো। জেলেদের নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত মাস্টারবাহনী আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দস্যুদের আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন উপকূলের ৩২৮ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। এখন আমাদের উপকূলকে দস্যুমুক্ত বলছি না, তবে সংখ্যা অনেক কমে এসেছে।
মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের দস্যুদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আজও আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের কিছু আর্থিক সহায়তা করা হবে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার বাংলদেশে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশে কোনো চোর-ডাকাত থাকতে পারে না। যারা আত্মসমর্পণ করেছে তারা যেন সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে পারে সেজন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু দেশবিরোধী, হাতে গোনা কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আপনারা কেউ গুজবে কান দেবেন না। যেকোনো তথ্য যাচাইয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিন, আমরা আপনাদের পাশে আছি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে র্যাব-৭ এর তত্ত্বাবধানে ৩৪ জন জলদস্যু অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তারা অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।