নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করুন: কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক
ঢাকা ২১ অক্টোবর: সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরও হিমাগার মালিক ও আড়ৎদারদের দৌরাত্বে দাম কমে না আসায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, “আপনারা মুনাফা করেন, মুনাফা করার জন্যই ব্যবসা করছেন। কিন্তু এ সুযোগে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার চিন্তা করবেন না। আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা সরকারের নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করুন।” বুধবার অ্যাগ্রিকালচার রিপোর্টার্স ফোরাম (এআরএফ) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে যোগ দিয়ে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আলুর দাম ৩৫ টাকা.. এটা অনেক দাম। বাস্তবতা বিবেচনা করে আমরা আরও পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করে দিলাম। কিন্তু আলুর দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এটা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
বাজার স্থিতিশীল রাখতে খুচরা বাজারে এক কেজি আলুর দাম ৩০ টাকায় বেঁধে দিয়ে তা কার্যকর করতে না পেরে পরে ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এছাড়া কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৭ টাকা এবং পাইকারিতে ৩০ টাকা কেজি বেঁধে দিয়ে মঙ্গলবার দাম পুনঃনির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
বাজারে আলুর দাম অস্বাভবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার পর ৭ অক্টোবর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৩ টাকা, পাইকারীতে ২৫ টাকা এবং খুচরায় দাম ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই দামে কেউ আলু বিক্রি করছিল না। এক কেজি আলু কিনতে খরচ হচ্ছিল ৫০ টাকা।
নতুন দর বেঁধে দিয়ে সেই দামে যাতে সব পর্যায়ে আলু বিক্রি হয় তা নিশ্চিত করতে ডেপুটি কমিশনারদের (ডিসি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী ওয়েবিনারে জানান, এ বছর করোনাভাইরাস মহামারীতে হতদরিদ্র মানুষ ও রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ করা ত্রাণে বিপুল পরিমাণ আলু বিতরণ করায় ও বন্যার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আলু উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
গত বছরে শুরুর দিকে কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের ‘ভিটামিন-এ’র ঘাটতি পূরণে সরকার শিগগিরই ধানের নতুন জাত ‘গোল্ডেন রাইস’ উন্মুক্ত করবে। দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও সেই ধান এখনও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়নি বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, “আমাদের এখানে চাল মোটামুটি ভালো উৎপাদন হয়। আমরা বেশি চাল খেতাম, চাল থেকে প্রোটিন আসত। চালই আমাদের মূল খাবার। আগে আমরা ৪২৫-৪৩০ গ্রাম চাল খেতাম। এটা কমে গিয়ে এখন ৩৬০-৩৭০ গ্রাম খাবার আমরা খাই। তার মানে আমরা চাল কমিয়ে পুষ্টিজাতীয় খাবার যেমন ডিম, দুধ, মাছ, মাংস এগুলোর উৎপাদন যদি বাড়াতে পারি, যদি তা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই পুষ্টির লক্ষ্য আমাদের অর্জিত হবে।”