বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বাড়ছে উত্তরপূর্ব ভারতে
বিআই ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বিজনেস ইনসাইডার
ঢাকা (১ নভেম্বর): ভারতের আসাম এবং ত্রিপুরাতে বংলাদেশি পণ্য জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি এর বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। ভারতের শূণ্য আমদানি করের কারণে সেখানে এর বাজার সম্প্রসারণ হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিষয়টি ভাল চোখে দেখছেন না বলে রোববার ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ২০১৯ সালের এর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৮%। ২০২০ সাল কোভিড সংক্রমণের বছর হলেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত প্রাণ। উত্তরপূর্ব ভারতে প্রাণের বিভিন্ন পণ্য বেশসহজলভ্য এবং জনপ্রিয়। প্রাণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচিত বেক্সিমকো, এসিআই, নাভানা এবং বসুন্ধরাও এ বাজারের দিকে মনোযোগি হচ্ছে। প্রাণের মি. নুডুলস, প্রাণ ঝালমুড়ি, পটোটো ক্র্যাকার্স, ড্রাই কেক এবং ফ্যামিলি টোস্টের মতো পণ্য পশ্চিমবঙ্গে খুবই পরিচিত এবং জনপ্রিয়। এমনকি শিলিগুড়িতেও কেই যদি দোকানে ম্যাঙ্গো জুস চান, দোকানি তাকে ফুর্তির পরিবর্তে হাতে ধরিয়ে দেন প্রাণের ফ্রুটো। আগামী পাঁচ বছরে ওই অঞ্চলে প্রাণের বাজার বর্তমানের চেয়ে ১০ গুন সম্প্রসারণ করা হবে বলে প্রাণের ভারতের সহযোগি প্রাণ বেভারেজের (ইনডিয়া) পরিচালক অঞ্জনাভ মজুমদার জানিয়েছেন।
প্রতিবেশি দেশের কোম্পানির এ ধরণের সাফল্যকে ভাল চোখে দেখছেন না সেখানকার ব্যবসায়ী মহল। মেঘালয় ভিত্তিক এক্সেল ফুডসের সহপ্রতিষ্ঠাতা আশিস দেউরা বলছেন, ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশ, মিয়ানমার আর নেপালের ফল এবং খাদ্য প্রক্রিয়া জাতকরণের ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’ পরিণত হয়েছে। বাজারে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে প্রাণ ড্রাই কেক। নাগাল্যান্ডে তুমুল জনপ্রিয় নেপালের রামপাম নুডুলস। ভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংগঠন লঘু উদ্যোগ ভারতীর সম্পাদক দেওরা বলেন, ভৌগলিক নৈকট্য থাকলেও অতিরিক্ত করের কারণে ভারতের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প সহজে বাংলাদেশের বাজারে ঢুকতে পারছে না। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে একাধিক স্মারক লিপি দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা নিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যাক্তরা উদ্বিগ্ন হলেও পূর্ব এবং উত্তরপূর্ব ভারতের বাজারের সরব উপস্থিত থাকা ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) এবং কৃষি ভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আইটিসি এ নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন নয়। আইটিসির মুখপাত্র বলেন, আইটিসির জোড়ালো বিতরণ ব্যবস্থাপনার কারণে ওই অঞ্চলে বাজার সম্প্রসারণ বেশ ভাল। প্রতিবেশি দেশের খাদ্যসহ পারসোনাল কেয়ারের কোন পণ্য এ অঞ্চলে আমাদেও জন্য তেমন উল্লেখযোগ্য হুমকি নয়।
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে প্রাণের সম্প্রসারণ উপেক্ষা করার উপায় নেই। ত্রিপুরাতে প্রাণ সবচেয়ে বড় বেসরকারি কর্মসংস্থানকারী হিসেবে চিহ্নিত। পরোক্ষা ভাবে অনেকের কর্মসংস্থানে সহায়তা করার পাশাপাশি সেখানে প্রাণের মোট কর্মচারির সংখ্যা প্রায় ৭০০। এ প্রসঙ্গে দেওরা বলেন, এ অঞ্চলে বাংলাদেশি কোম্পানি স্থাপন বা এর পণ্য বিক্রি কোন সমস্যা নয়। বাংলাদেশ থেকে কোন পণ্য আনার ক্ষেত্রে নাম মাত্র কর ধার্য্যরে বিষয়টিতেই তাদের মূল আপত্তি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রাণের লিচি ড্রিঙ্কের আমদানি স্থানীয় উদ্যোক্তদের বড় ধরণের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে বলে তিনি জানান।