জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ছবি)
ঢাকা (১০ ফেব্রুয়ারি): জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিলের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার সিঙ্গাপুর থেকে একটি ইংরেজি গণমাধ্যমকে টেলিফোনে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সিদ্ধান্তের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের “বীর উত্তম” খেতাব বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত জামুকা নিয়েছে, আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান ও অসম্মান করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের অধিনায়ক। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে জিয়াউর রহমান ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কথা আমরা ভাবতেই পারি না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে গেছে যে, এখন তারা ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত সত্যগুলোকেও অস্বীকার করছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মদদ ও খুনিদের পুনর্বাসনে জিয়ার দায় প্রশ্নে তিনি বলেন, এই অভিযোগটির পেছনে সত্যতা কোথায়? এর কোনো সত্যতা নেই। জিয়াউর রহমান খুনে মদদ দিয়েছে, তার প্রমাণ কোথাও নেই। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়ে গেছে। সেই বিচারে তো তার (জিয়াউর রহমান) নাম কোথাও আসেনি।
ফখরুল আরও বলেন, ‘শফিউল্লাহ সাহেব ছিলেন সেনাপ্রধান। তিনি তো নীরব-নিশ্চুপ ছিলেন। তার সম্পর্কে তো কিছু বলা হয়নি। তার সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আরও অনেকে ছিলেন, যাদের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও তখন কিছু করেননি। পরবর্তীতে তাদের অনেককে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা গেছে, এমপি হতে দেখা গেছে। খন্দকার মুশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে দেখা গেছে। তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নীরব। কিন্তু সরব জিয়াউর রহমানের ক্ষেত্রে।।
এর একমাত্র কারণ হচ্ছে- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তা। তার গড়া রাজনৈতিক দল বিএনপির জনপ্রিয়তা। যেহেতু রাজনৈতিকভাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা কমানো যাচ্ছে না, সে কারণেই জিয়াউর রহমানের চরিত্র হনন করে বিএনপির ক্ষতি করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। আরেকটি বিষয় যেটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, এখন যেভাবে চতুর্দিকে সরকারের অপকর্মের কথা উঠে আসছে, সেখান থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর বিষয়টিও এমন সিদ্ধান্তের পেছনে কাজ করেছে। নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য তারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে রাজনীতি করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার নিজেদেরকে যতই শক্তিশালী মনে করুক না কেন, তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। এটা তারা খুব ভালো করে জানে। জনগণের মাঝে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। সেটা তারা জানে এবং জানে বলেই এভাবে গণতন্ত্রকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে, জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’
তিনি আরও বলেন, যে অপরাধ করেছে, অবশ্যই তার বিচার হবে। যে খুন করেছে, অবশ্যই তার বিচার হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ সামনে এনে জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। যা আওয়ামী লীগ এখন করছে। জিয়াউর রহমানের স্বীকৃতি তিনি নিজে নেননি। বঙ্গবন্ধুর সরকারই তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই স্বীকৃতি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।